এই নাম নিয়েই বিতর্ক। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
পুলিশ কর্তাদের নাম এবং যোগাযোগ করার ফোন নম্বর লেখা বোর্ডে তৃণমূল প্রার্থীর নামও জ্বলজ্বল করছে। ময়নাগুড়ি থানায় ঢুকলেই দেখা যাবে জলপাইগুড়ি জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে লেখা রয়েছে জেমস কুজুরের নাম। কুমারগ্রাম বিধানসভা থেকে এবারে তৃণমূল জেমস কুজুরকে প্রার্থী করেছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, কমিশনের যাবতীয় নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে একজন কর্মরত পুলিশ কর্তাকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। যে দিন শাসকদলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়, সে দিনও নিজের চেম্বারে বসে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে অফিস করেছেন জেমস কুজুর। নির্বাচন সংক্রান্ত ফাইল, নির্দেশে সই করেছেন। এমনকী ভোটে জিতলে তিনি কী পদক্ষেপ করবেন, তাও চেম্বারে বসেই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন। এ নিয়ে কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরে, কুজুর দাবি করেছিলেন তার আগেই তিনি ইস্তফা দিয়েছিলেন। নিজের জিনিসপত্র আনতে সে দিন অফিসে গিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছিলেন কুজুর। ইস্তফা দেওয়ার পরেও বোর্ডে কুজুরের নাম কেন থাকবে তা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। পুলিশ-প্রশাসনকে তৃণমূল কুক্ষিগত করে রেখেছিল, তার প্রমাণ কুজুরের শাসক দলের প্রার্থীপদ পাওয়াই প্রমাণ করে বলে বিরোধীদের অভিযোগ, এখন কমিশনের নজরদারির মাঝেও পুলিশ প্রশাসন যে তৃণমূলের ‘ছোঁয়া’ কাটিয়ে উঠতে পারেনি, ময়নাগুড়ি থানায় তারই প্রমাণ মিলল বলে অভিযোগ।
যে কোনও থানাতেই জেলার পুলিশ কর্তাদের নাম এবং সরকারি নম্বর লেখা থাকে। ইস্তফা দেওয়ার পরে কেন কুজুরের নাম বোর্ড থেকে মুছে দেওয়া হল না, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। কুজুরের নামের পাশে বোর্ডে লেখা নম্বরটি অবশ্য এখন কুজুরের কাছে নেই। যদিও, জেমস কুজুরের নাম বোর্ডে থাকায়, অনেক সাধারণ বাসিন্দাই কোনও প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন বলে দাবি। সে ক্ষেত্রে পুলিশের বোর্ডে কুজুরের নাম বাসিন্দা তথা ভোটারদের প্রভাবিত করতে পারে বলেও দাবি করা হয়েছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, ‘‘ভোট বিধি চলছে। কোনও মন্তব্য করতে পারব না।’’ পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ময়নাগুড়ি থানার ঘটনাটি নেহাতই ভুল বশত হয়েছে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার অভিযোগ করে বলেন, ‘‘তৃণমূল গত পাঁচ বছরে পুলিশ প্রশাসনকে যে ভাবে দলদাসে পরিণত করেছে, তা এত সহজে মোছা সম্ভব নয়।’’
যাঁর নাম নিয়ে বির্তক সেই জেমস কুজুর বলেন, ‘‘চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েই ভোটে লড়ছি। এ বিষয়ে এখন আমার কিছু বলার নেই।’’