ভাঙা সেতু দেখাচ্ছেন তৃণমূল নেতা। —নিজস্ব চিত্র।
বিপজ্জনক সেতু দিয়ে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হয় স্থানীয়দের। অনেক আবেদনেও কাজ হয়নি। আর কিছু দিনের মধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু না করলে নবান্ন যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য। তাঁর সঙ্গে কোমর বাঁধছেন গ্রামের সাধারণ মানুষও। তাঁদের অভিযোগ, বহু বার বলেও লাভ হয়নি। তাই জলপাইগুড়ি থেকে সবাই হেঁটে নবান্ন যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর তার নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জিত কর্মকার। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সঞ্জিত জানাচ্ছেন, দুর্গাপুজো পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। পুজোর পরেই হেঁটে নবান্ন যাত্রা করবেন।
গৌরীহাট এলাকার করলা নদীর উপর সেতুটির দু’পাশের অধিকাংশ রেলিংয়ের কঙ্কালসার চেহারা। সেতুর নড়বড়ে অবস্থা। সেখান দিয়েই ছোট যানবাহনের পাশাপাশি, প্রচুর মানুষ যাতায়াত করেন। বিশেষ করে প্রতি মঙ্গলবার স্থানীয় হাট বসায় ভিড়ের পরিমাণ ওই একটি দিনে আরও বেড়ে যায়। সেতুর যা অবস্থা তাতে যে কোনও সময় দুর্ঘটনা হতে পারে। বর্ষার সময় প্রাণের ঝুঁকি এড়াতে সেতু এড়িয়ে ঘুরপথে চলাচল করছেন প্রচুর মানুষ। এখন তার মাঝ বরাবর প্রায় ৩ ফুট অংশ বসে গিয়েছে। যে কোনও সময় সেতু ভেঙে পড়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অবিলম্বে সংস্কার চাইছেন স্থানীয়েরা।
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, বছর পাঁচেক ধরে বেহাল পাতকাটা এবং অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যবর্তী করলা নদীর উপর ওই সেতুটি। জমিজট-সহ বিভিন্ন কারণে নতুন সেতুর কাজে হাত দিয়েও পিছিয়ে যেতে হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। এ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেক সময় অতিবাহিত হয়ে গিয়েছে। এখন সেতুটি হওয়া খুবই প্রয়োজন। দুর্ঘটনা এড়াতে এখনই সেতু তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।’’ অমলেশ রায় নামে আর এক জন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘সেতু বিপজ্জনক হলেও প্রশাসনের তরফে নানা গড়িমসি ছিল। মাঝখান থেকে সেতু বসে গিয়েছে। দুই গ্রামের মধ্যে এই সেতুর গুরুত্ব অপরিসীম। সত্যি কথা বলতে কী, আমরা এখন বলাও ছেড়ে দিয়েছি।’’ গ্রামবাসীরা বলছেন, সেতু তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ না করলে হেঁটে সোজা নবান্নে যাবেন তাঁরা। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য সঞ্জিত বলছেন, ‘‘প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দরবার করব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এক বছর আগে টেন্ডারের মাধ্যমে সেতু তৈরির কাজ শুরু হলেও দেখা যায় ইঞ্জিনিয়াররা ভুল জায়গায় কাজ শুরু করছেন। তখন কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। তার পর থেকে আর কাজের কোনও নামগন্ধ নেই। তবে এবার কাজ না হলে বৃহত্তর স্বার্থে স্থানীয়দের নিয়ে পায়ে হেঁটে নবান্ন রওনা হব।’’
এ নিয়ে জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মণের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তিনি অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের কর্মসূচিতে দিল্লিতে রয়েছেন। পরে এই সেতুর বিষয়ে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।