যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ গঙ্গার পাড়ে। মানিকচকে। নিজস্ব চিত্র
গঙ্গার জলস্ত র বিপদসীমা ছুঁইছুঁই। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল থেকেই মালদহে জলস্তর বিপদসীমার মাত্র এক সেন্টিমিটার নীচে দিয়ে বইছে। সে সঙ্গে মারাত্মক ভাঙন চলছে ভুতনির কেশরপুরে। রবিবার সন্ধ্যা থেকে সে ভাঙন শুরু হয়েছে। সে সন্ধ্যাতেই কেশরপুরে গিয়েছিলেন এলাকার তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। গঙ্গার ভাঙনকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ ধরে নিয়ে ভাঙন ঠেকাতে কেন্দ্র কেন কাজ করবে না এ প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ জানিয়েছেন সাবিত্রী। কেশরপুরের পাশাপাশি, ভুতনির বড় কালুটোনটোলা এবং পশ্চিম রতনপুর গ্রামে কোশী চ্যানেলে ভাঙন অব্যাহত। যদিও রবিবার সন্ধ্যা থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী ভাবে ভাঙন প্রতিরোধ শুরু করেছে সেচ দফতর। অন্য দিকে, গঙ্গার ভাঙন অব্যাহত কালিয়াচক ৩ ব্লকের গোলাপমণ্ডলপাড়াতেও।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন গঙ্গার জলস্তর বেড়ে হয়েছে ২৪.৬৮ মিটার। দফতরের বাস্তুকারদের ধারণা, যে ভাবে জলস্তর বাড়ছে তাতে খুব দ্রুত তা বিপদসীমা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দিকে, জল বিপদসীমা ছুঁইছুঁই হতেই মানিকচক, কালিয়াচক ২ ও ৩ ব্লকের গঙ্গা তীরবর্তী অসংরক্ষিত এলাকাগুলিতে জল ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে রাত পর্যন্ত তেমন খবর নেই।
গঙ্গার জল বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানিকচকের ভুতনির কেশরপুরে ভাঙনের তীব্রতা মারাত্মক হয়। নদীর পাড় ক্রমশ ভেঙে সার্কিট বাঁধের কাছাকাছি চলে এসেছে। সোমবারও ভাঙন অব্যাহত ছিল। রবিবার সন্ধেয় ভাঙন কবলিত সেই কেশরপুরে গিয়েছিলেন মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। সাবিত্রী বলেন, ‘‘ভাঙন ঠেকাতে রাজ্য সরকার সাধ্য মতো কাজ করে চলেছে। কিন্তু কেন্দ্র হাত গুটিয়ে রাখছে। গঙ্গার ভাঙনকে জাতীয় বিপর্যয় ধরে নিয়ে কেন্দ্রের উচিত ফরাক্কা ব্যারাজকে দিয়ে এ সব এলাকায় কাজ করানোর। কিন্তু কেন্দ্র কিছুই করছে না।’’
যদিও সাবিত্রীর মন্তব্য নিয়ে বিজেপির দক্ষিণ মালদহ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বরাদ্দে ফরাক্কা ব্যারাজ তার নিজস্ব এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধ করছে। ফলে, কেন্দ্র বঞ্চনা করছে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’
এ দিকে কেশরপুরের কাছেই বড় কালুটোনটোলা ও পশ্চিম রতনপুরে কোশী চ্যানেলে এ দিন ভাঙন অব্যাহত ছিল। ওই দু’টি এলাকায় বালির বস্তা ফেলে অস্থায়ী ভাবে ভাঙন প্রতিরোধ শুরু করেছে সেচ দফতর। দফতরের অধীক্ষক বাস্তুকার (উত্তর মণ্ডল ১) উত্তমকুমার পাল বলেন, ‘‘কোশী চ্যানেলের বড় কালুটোনটোলা ও পশ্চিম রতনপুরে ভাঙন ঠেকাতে কাজ শুরু হয়েছে। কেশরপুরেও ভাঙন আটকাতে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। গঙ্গার জলস্তর বিপদসীমা ছাড়ালে, পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় সেই চেষ্টাআমরা করছি।’’