‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে তৃণমূল বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির টিকিটে শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রে জিতে বিধায়ক হলেও স্থানীয় স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন বরেনচন্দ্র বর্মণ। তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে তিনি পালন করছেন না বলে অভিযোগ করলেন সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। এর জেরে স্কুলে অব্যবস্থা দেখা দিয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁর। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে স্কুলশিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রীকে নালিশ জানালেন সিতাইয়ের বিধায়ক। যদিও অব্যবস্থার পিছনে সরকারি প্রকল্পকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক।
‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে শুক্রবার জাটিগাড়া মাধবচন্দ্র হাইস্কুলে যান জগদীশচন্দ্র। ওই স্কুলেই প্রধান শিক্ষক হিসাবে রয়েছেন বরেনচন্দ্র। অভিযোগ, স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত ক্লাস থাকলেও স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন মোটে ৪ জন। এমনকি, পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় ক্রমশই কমছে ছাত্রসংখ্যা। তাই স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন জগদীশচন্দ্র। বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার স্কুলের পরিচালন কমিটির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পাশাপাশি, স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণের কাছে নালিশ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের প্রধান শিক্ষক শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক। তিনি অনিয়মিত স্কুলে আসায় অন্যান্য শিক্ষকরাও এর সুযোগ নিচ্ছেন। যার ফলে স্কুলে ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে না। আর স্কুলে ক্লাস না হওয়ার কারণে প্রতিনিয়ত ছাত্ররা পার্শ্ববর্তী স্কুলে চলে যাচ্ছে। খাতায়কলমে স্কুলে ছাত্রসংখ্যা প্রায় ৫০০। তবে ক্লাস না হওয়ায় ছাত্রদের উপস্থিতি দৈনিক প্রায় ৬০ জনের মতো। এই পরিস্থিতির বিষয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বিষয়টি ফোনে বলা হয়েছে স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা শীতলকুচি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মণকেও। তিনি যদি নিয়মিত স্কুলে আসতেন, তা হলে পরিস্থিতি এতটা খারাপ হত না।’’
যদিও এই পরিস্থিতির জন্য তৃণমূল সরকারের জেনারেল ট্রান্সফার এবং ‘উৎসশ্রী’ প্রকল্পকে দায়ী করেছেন বরেনচন্দ্র। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৪ সালের পর থেকে জেনারেল ট্রান্সফার এবং ‘উৎসশ্রী’ চালু হয়েছে। এর জেরে স্কুল থেকে চলে গিয়েছেন বহু শিক্ষক। স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সেই টিচারদের ট্রান্সফারে মত দিয়েছে। যার ফলে স্কুল ফাঁকা হয়ে গিয়েছে। এই স্কুলের জন্য প্রধান শিক্ষক-সহ ১২ জন শিক্ষক বরাদ্দ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে স্থায়ী শিক্ষকের সংখ্যা প্রধান শিক্ষক-সহ মাত্র ৪ জন।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘বিধানসভা চলাকালীন স্কুলে যেতে পারি না। কিন্তু যখন বিধানসভা থাকে না, তখন নিয়মিত স্কুলে যাই। আগে এই স্কুলটি মাধ্যমিক পর্যন্ত ছিল। কিন্তু বর্তমানে স্কুলটিকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আমি করিয়েছি। যাঁদের অভিযোগ, আমি স্কুলে যাই না, তাঁদের বলছি, আপনারা আসুন কী ভাবে স্কুলটির ভাল করা যায়, সে বিষয়ে সহযোগিতা করুন। সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক আমাকে ফোন করেছিলেন। আমিও তাঁদের সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি।’’