সাংবাদিক বৈঠকে শিবপদ পাল। —নিজস্ব চিত্র
ভোট যত এগিয়ে আসছে, কোচবিহারে ততই প্রকট হচ্ছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। কোচবিহার পুরসভার প্রশাসক ভূষণ সিংহকে অপসারণের দাবি তুললেন স্বয়ং দলের জেলা মুখপাত্র শিবপদ পাল। তাও আবার রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে। স্বাভাবিক ভাবেই ক্রমাগত গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসায় অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।
গত মাসেই কোচবিহার সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাঁর মূল সভামঞ্চে জায়গা পাননি ভূষণ। ফলে সভা শুরুর আগেই তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। তার পর থেকেই জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে ভূষণের দূরত্ব তৈরি হয়। পার্থপ্রতিমের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই মুখ খোলেন ভূষণ। তার পর থেকে সময় যত গড়িয়েছে, বেড়েছে তিক্ততা। কোচবিহার শহর ব্লক কমিটির তালিকা ঘোষণার পর পার্থপ্রতিমের ঘোষণা করা তালিকা অমান্য করে তিনি জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে একটি পৃথক কমিটির তালিকা ঘোষণা করেন। জেলা সভাপতিও বলেন, ভূষণ সিংহ দলবিরোধী কার্যকলাপ করছেন। দল তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।
ভূষণ সিংহও পাল্টা অভিযোগ তুলেছিলেন, জেলা সভাপতি সঠিক ভাবে দল পরিচালনা করতে পারছেন না। অভিজ্ঞতার অভাবে তিনি যাঁদের দায়িত্ব দিয়েছেন, তাঁদের দিয়ে দল চালানো সম্ভব নয়।
এমন পরিস্থিতিতেই রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে কার্যত একই সুর শিবপদর গলায়। ভূষণ সিংহকে শুধু অপসারণের দাবি নয়, রীতিমতো সময়সীমা বেঁধে দেন। তিনি বলেন, ‘‘ভূষণ সিংহ যে সব কথা বলছেন এবং কাজ করছেন, তা দলবিরোধী। আমরা রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করেছি, তাঁকে সরিয়ে দিতে। সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘৭দিনের মধ্যে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে দলের মধ্যে থেকেই তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব আমরা।’’
অন্য দিকে শিবপ্রসাদের সাংবাদিক বৈঠকের পরে ভূষণ সিংহ বলেন, ‘‘কে কী বলল, তাতে আমি গুরুত্ব দিই না। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে এই পদে বসিয়েছেন। তিনি চাইলে আমি সরে যাব। আমার কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। আমি সভাপতির ভুলের কথা বলেছি এখনও বলছি। আমি তৃণমূলের ভাল চাই বলেই সত্যি কথা বলছি।’’