—নিজস্ব চিত্র।
স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। মিলছে না সরকারি সাহায্যও। এমনই অভিযোগ মালদহের রতুয়ার বাসিন্দা ইমরান আলির। দুয়ারে দুয়ারে প্রত্যাখ্যাত হয়ে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করলেন প্রতিবন্ধী ওই যুবক।
এক সময় ছুটে বেড়াতেন রতুয়া দুই নম্বর ব্লকের আড়াইডাঙার পীরপুর এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি ইমরান। কেউ বিপদে পড়লে পাশে দাঁড়াতেন, সাহায্য করতেন। আজ সেই ইমরান শয্যাশায়ী। তিনি নিজেই সাহায্যপ্রার্থী। এক ডাকে সকলেই চেনেন ইমরানকে। কিন্তু আজ তিনি একা লড়াই চালাচ্ছেন। সেই লড়াইয়ে ‘হার মেনে’ স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছেন ইমরান।
ইমরান ভালবাসতেন ফুটবল খেলতে। ২০১২ সালে সেই ফুটবল খেলতে গিয়েই কোমরে চোট পান। তার পর থেকেই ইমরান চলচ্ছক্তিহীন। সম্প্রতি করোনা অতিমারিও জোরালো আঘাত দিয়েছে ইমরানকে। মৃত্যু হয়েছে তাঁর বাবা শেখ হেলুর। এখন স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর ছোট পরিবার। কিন্তু চিকিৎসার খরচ করতে করতেই আজ তিনি নিঃস্ব। ইমরানের দাবি, পঞ্চায়েত প্রধান থেকে ব্লক প্রশাসন এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও বাঁচার আকুতি জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু অভিযোগ, একটি হুইল চেয়ার ছাড়া আর কিছুই জোটেনি। ইমরানের অভিযোগ, ‘‘আমাদের রেশনকার্ড আছে। কিন্তু তাতে কিছু পাওয়া যায় না। ওষুধ কেনার পয়সা নেই। এই ভাবে বেঁচে থাকা যায় না।’’
চিকিৎসকেরা ইমরানকে জানিয়েছেন, কোমরের আঘাতের জেরে তাঁর পায়ের মাংসপেশি শুকিয়ে গিয়েছে। হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। এখন তাঁর সঙ্গী হয় বিছানা না হলে হুইল চেয়ার। তাঁর প্রতিবন্ধী শংসাপত্র রয়েছে। রয়েছে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও। কিন্তু তাতে তিনি চিকিৎসা পান না বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি, প্রাথমকি ভাবে তিনি ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা হয়নি বলে অভিযোগ। এর পর আরও এক ধাপ এগিয়ে বিষয়টি তিনি নবান্নেও জানান বলে ইমরানের দাবি। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ। এখনও গ্রামের কেউ বিপদে পড়লে পাশে দাঁড়ান ইমরান। প্রশাসনিক দফতরে চিঠি লিখে দেন। কিন্তু সেই ইমরানই এ বার স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রীকে।
ইমরানের কথা শুনে নিয়ে চাঁচোলের মহকুমাশাসক কল্লোল রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি বিডিওকে খোঁজ করতে বলা হয়েছে। ওই ব্যক্তি যাতে প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা পান তার ব্যবস্থা করা হবে।’’