অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী না হওয়ার বার্তা কর্মীদের। প্রতীকী ছবি।
ভোটের তিনদিন আগে প্রার্থী এবং দলের নেতাদের ‘অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী’ হতে বারণ করলেন অরূপ বিশ্বাস। পুরভোটে জলপাইগুড়ি জেলার কোঅর্ডিনেটর তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বুধবার জলপাইগুড়ির কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের হলঘরে তৃণমূলের নির্বাচনী সভায় বলেন, “অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ফল ভাল হয় না।”
পুরভোটে দলের ফলাফলের পথ থেকে ‘কাঁটা সরানো’র কাজ গত মঙ্গলবার শহরে পৌঁছেই অরূপ শুরু করে দিয়েছিলেন। এ দিন মঞ্চে ‘কাঁটামুক্ত’ ছবিও দেখিয়ে দিয়েছেন। ‘বিক্ষুব্ধ’ তৃণমূল নেতা শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাত ধরে মঞ্চে উঠিয়েছেন অরূপ, তাঁকে দিয়ে বক্তৃতাও করিয়েছেন। শেখর বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার বুকে রয়েছেন।” তার পরে ‘অভিমানী’ মোহন বসুর বক্তব্য মোবাইলের লাউডস্পিকার চালিয়ে মাইকে সকলকে শুনিয়েছেন। মোহন বসু বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রার্থীরা ২৫টি ওয়ার্ডেই জিতবে। প্রার্থীরা যেখানে ডাকবেন সেখানে আমি প্রচারে যাব।” মঞ্চে তখন হাসিমুখে দাঁড়িয়ে অরূপ এবং জলপাইগুড়ির তৃণমূল প্রার্থীরা।
এক নম্বর ওয়ার্ডের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা শেখরকে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন জমা দেওয়ার মামলার এ দিনও শুনানি ছিল হাই কোর্টে। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছে, শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলে এখন মনোনয়ন জমা দিতে পারেন এবং সেই মনোনয়ন গ্রহণ করবে কিনা তা কমিশন বিবেচনা করবেন। যদিও গত দু’দিন ধরে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে অরূপ বিশ্বাসের লাগাতার অনুরোধের পরে শেখর আর মনোনয়ন নিয়ে এগোতে চান না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
বিক্ষুব্ধদের ছাড়া যে জলপাইগুড়ির পুরভোট তৃণমূলের পক্ষে মসৃণ হত না সে কথা বুঝেই সক্রিয় হয়েছিলেন অরূপ। এ দিন সমবায় ব্যাঙ্কের হলে এসেই অরূপ বলেন, “মোহনদা (বসু) কোথায়। মোহনদাকে ডেকে আনো।” ফিজিওথেরাপি চলায় মোহন বসু আসতে পারেননি। তবে ফোন করে নিজের সমর্থন জানিয়ে দিয়েছেন।
অরূপ বলেন, “কেউ বলছে জলপাইগুড়ি পুরভোটের ফল পঁচিশ-শূন্য হবে, কেউ বলছে বোর্ড দখল হয়েই গিয়েছে। আমি বলছি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ভাল নয়। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসের ফল খারাপ হয়।” এই হুঁশিয়ারির ব্যাখ্যা দিয়ে অরূপের দাবি, বিরোধীদের বোঝাপড়া হয়েছে। বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে বিরোধীর শক্তি বেশি তাকে অন্যেরা ভোট দেবে বলে ঠিক হয়েছে। বিরোধী দল প্রচারে লোক পাচ্ছে না দেখে খুশি হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেও অরূপের দাবি।