প্রতীকী ছবি
পুরসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে তৃণমূলের। কিন্তু গত বছর হয়ে যাওয়া লোকসভা ভোটের ফলাফলে জলপাইগুড়ি পুরসভায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। বেশ কিছু জেতা ওয়ার্ডে ভোট প্রাপ্তির নিরিখে রাজ্যের শাসকদলের প্রার্থী শেষ করেছিলেন তিন নম্বরে। এই ফলেই চিন্তা বেড়েছে তৃণমূলের শিবিরে। এ বার আসন্ন পুরভোটে দখলে থাকা পাঁচটি ওয়ার্ডে জেতা কাউন্সিলরের পরিবর্তে নতুন মুখ আনার প্রস্তাব করল জেলা তৃণমূল। প্রাক্তন এক কংগ্রেস কাউন্সিলরও তৃণমূলের টিকিট পেতে পারে বলে দলের একটি অংশ জানাচ্ছে। সূত্রের খবর, বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস জোটের সঙ্গে টক্কর দিতেই এমন কৌশল জেলা নেতৃত্বের।
বর্তমান চেয়ারম্যান মোহন বসুকে সামনে রেখেই গত পুরভোটগুলি লড়ে সাফল্য পেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু এখন তিনি অসুস্থ। কাকে মুখ করা হবে, কাকে সামনে রেখে লড়াইয়ে নামা হবে তা এখনও স্থির করতে পারেনি দল। এই পরিস্থিতিতে পুরবোর্ড দখলে থাকবে কিনা তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেছেন বেশ কিছু জেলাস্তরের নেতা। নিজেদের জেতা ওয়ার্ড ধরে রাখাটাও এখন চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ। সেই কথা মাথায় রেখেই প্রার্থী তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। দল সূত্রে খবর, ১, ৬, ১৯, ২০, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন মুখ আনা হতে পারে। দলের জেলা কমিটির তৈরি করা খসড়া তালিকা অনুযায়ী ১ নম্বর ওয়ার্ডে স্থানীয় একটি ক্লাবের কর্তাকে প্রার্থী করা হতে পারে। তিনি দলের পুরনো নেতা হিসেবেও পরিচিত। দলেরই দখলে থাকা ৬ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন মুখ হিসেবে এক আইনজীবী নেতাকে প্রার্থী করার সুপারিশ করেছে জেলা নেতৃত্ব। ১৯ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন মুখ আনা হবে বলে জেলা নেতৃত্ব ভাবলেও কাকে প্রার্থী করা হবে তা এখনও স্থির হয়নি। সমাজকর্মী হিসেবে পরিচিত এক ব্যক্তিকে ২১ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী করার কথা ভেবেছে জেলা নেতৃত্ব।
তৃণমূল সূত্রের খবর বিরোধীদের দখলে থাকা ওয়ার্ড কাড়তেও প্রার্থী তালিকায় চমক থাকছে। ‘বামদুর্গ’ হিসেব পরিচিত ২ নম্বর ওয়ার্ডে এক প্রতিষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষক তৃণমূলপ্রার্থী হতে পারেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করতে পারে এক প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলরকে। কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী করতে পারে এক সমাজসেবীকে। কংগ্রেসের দাপুটে কাউন্সিলর পিনাকী সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে লড়তে তৃণমূল ২২ নম্বর ওয়ার্ডে এক শিক্ষককে প্রার্থী করতে চাইছে। কংগ্রেসের ওয়ার্ড ২৪ নম্বরে স্থানীয় একটি ক্লাবের কর্মকর্তাকে প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রাখছে জেলা তৃণমূল।
নতুন যাঁদের প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে তাঁদের বেশিরভাগেরই রাজনৈতিক পরিচয় ছাড়াও অন্য পরিচয়ও রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে আলাদা করে তাঁদের সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি কথা বলেছেন বলে খবর। জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর মন্তব্য, “প্রার্থী নিয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। পিকে-র টিম দেখে রিপোর্ট দিয়েছে, রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেবেন।”