ফাইল চিত্র
মাত্র কয়েক মাস বাকি। তার পরেই মেয়াদ শেষ হবে গঙ্গারামপুর পুরসভার। কিন্তু তার আগেই তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচিত তিন কাউন্সিলরের সদস্যপদ বাতিল করতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করল শাসকদল।
দলীয় সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই দলত্যাগ বিরোধী আইনের আওতায় ওই তিন কাউন্সিলরের হাতে প্রশাসনের মাধ্যমে কারণ দর্শানোর নোটিস ধরিয়েছে তৃণমূল। পুরভোটের আগে এখন তা নিয়ে নতুন করে চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
প্রশাসনিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পুর-নির্বাচনে বামেদের হারিয়ে গঙ্গারামপুর পুরসভা দখল করে তৃণমূল। সেই সময় পুরপ্রধান হয়েছিলেন প্রশান্ত মিত্র। গত বছর কয়েক মাসের জন্য ভাইস চেয়ারম্যান হন তুলসীপ্রসাদ চৌধুরী। লোকসভা নির্বাচনের পরে প্রশান্ত ও তুলসীপ্রসাদ-সহ কয়েক জন কাউন্সিলর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে শামিল হয়।
তৃণমূল সূত্রে খবর, তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দিতে শাসক-শিবির অনাস্থা প্রস্তাব আনে। তা নিয়ে দীর্ঘ আইনি লড়াই হয়। শেষ পর্যন্ত আস্থাভোটে শামিল হননি প্রশান্ত এবং তুলসীপ্রসাদ। তাঁদের পদ থেকে অপসারিত করে পুরবোর্ড দখল করে তৃণমূল।
কিন্তু পুরপ্রধান বা উপ-পুরপ্রধানের পদ থেকে দু’জনকে অপসারিত করেই থেমে থাকেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আস্থাভোটের পরেই ওই দু’জন ‘হেভিওয়েট’ কাউন্সিলর এবং প্রশান্ত-অনুগামী হিসেবে পরিচিত কাউন্সিলর অমিতা সরকার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী
আইনকে হাতিয়ার করে আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেয় তৃণমূল। আইন অনুযায়ী তাঁদের কাউন্সিলরের মর্যাদা কেড়ে নিতে প্রশাসনের কাছে আবেদন করে তৃণমূল।
সেই আবেদনের ভিত্তিতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার ওই তিন কাউন্সিলরকে চিঠিও পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। সেই চিঠিতে তাঁদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সেই বক্তব্যে অসঙ্গতি থাকলে তাঁদের কাউন্সিলরের মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হবে।
তৃণমূলের একাংশ নেতার দাবি, দলত্যাগ বিরোধী কাজের অভিযোগের সপক্ষে অনেক প্রমাণ রয়েছে। যে সবের নিরিখে তিন জনের কাউন্সিলর মর্যাদা হারানো শুধু সময়ের অপেক্ষা।
এ নিয়ে প্রশান্তকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে তুলসীপ্রসাদ বলেন, ‘‘শো-কজের চিঠি পেয়েছি। দলের অন্দরে আলোচনা হচ্ছে। তার পরে উত্তর দেওয়া হবে।’’
বিজেপির অন্দরমহলের খবর, যেহেতু পুরবোর্ডের মেয়াদ আর মাত্র তিন মাসের মতো রয়েছে, তাই ওই শো-কজ নোটিস নিয়ে প্রশান্তরা খুব বেশি ভাবছেন না।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘাসফুল প্রতীকে জিতেও বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় ওই তিন নেতাকে কোনও ভাবেই কাউন্সিলর হিসেবে মর্যাদা দিতে রাজি নন দলীয় নেতৃত্ব। সে জন্যই বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তাঁদের সদস্যপদ বাতিল করতে চাইছেন তাঁরা।
তৃণমূল নেতা তথা উপ-পুরপ্রধান রাকেশ পণ্ডিত বলেন, ‘‘ওদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তাই তাঁদের সদস্যপদ খারিজ করতে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছিলাম৷ এখন দেখি ওঁরা কী জবাব দেয়।’’