মালদহের দুই পুরসভা ভোটে প্রতি ওয়ার্ডে এক জন নেতাকে দায়িত্ব দিচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী।
পুরভোটে দলের প্রার্থী জিতছেন। কিন্তু লোকসভা, বিধানসভা ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ওই সব এলাকায় তৃণমূলের থেকে বিজেপি এগিয়ে—সম্প্রতি মালদহের নেতানেত্রীর নিয়ে বৈঠকে এই তথ্য দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, এ বারে এই পরিস্থিতি বদলাতে হবে। সেই লক্ষ্যে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভা দু’টির মোট ৪৯টি ওয়ার্ডের জন্য ৪৯ জনকে দায়িত্ব দিচ্ছেন তিনি। দলের শিক্ষিত ও সচেতন ওই ৪৯ জন কর্মীকে একটি করে মোটরবাইকও দেওয়া হবে। নিজেদের দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ড ঘুরে তাঁরা এসে রিপোর্ট দেবেন দলকে।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ময়দান টেন্টে মালদহের তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য-নেতাদের নিয়ে লোকসভার প্রস্তুতি বৈঠক করেন দলের জেলা পরিদর্শক শুভেন্দু অধিকারী। সেই বৈঠকে পুরাতন মালদহ এবং ইংরেজবাজার পুরসভা এলাকার ভোটের ফলাফল নিয়ে আলোচনা করা হয়। ওয়ার্ড ধরে ধরে পরিসংখ্যান তুলে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তার ব্যাখ্যাও করা হয়। ভোট কমছে কেন, সেই প্রশ্নের সদুত্তর কোনও নেতাই দিতে পারেনি। শুভেন্দুবাবু পরিষ্কার বলে দেন, এ বারে লোকসভা নির্বাচনে মালদহের দু’টি পুরসভায় কোনও ওয়ার্ডে বিজেপি বেশি ভোট পেলে সেই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে টিকিট দেওয়া নিয়ে দল ভাবনাচিন্তা করবে।
জেলার কোর কমিটির সদস্য এক নেতার কথায়, কাউন্সিলররাই শহরে দলের মুখ। তাঁদের কাজকর্ম এবং ব্যবহারের উপর দলের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। কিন্তু অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে, এত কাজের পরেও ফল ভাল হচ্ছে না। এর পিছনে কারণ কী, তা-ও বোঝা যাচ্ছে না। তাই এই নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে দলীয় নেতাদের।
তৃণমূলের এক জেলার নেতার কথায়, মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরে দলের দায়িত্বে রয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তিনি লোকসভা ভোটে দলের অন্যতম প্রধান কান্ডারি। দলের প্রচার থেকে শুরু করে কৌশল, সব কিছু ঠিক করার দায়িত্ব নেত্রী তাঁর উপর ছেড়ে দিয়েছেন। ভোটের ফল খারাপ হলে দায়িত্ব তাঁর ঘাড়েই বর্তাবে। তাই আগাম সতর্ক করে দলকে তৈরি রাখতে চাইছেন তিনি। এই বৈঠকে সেই বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, শুভেন্দুর কথা মেনে দল কি ভোটবাক্সে ব্যবধান তৈরি করতে পারবে? জেলা নেতারা এই নিয়ে এখনই কিছু বলতে নারাজ। তাঁদের কারও কারও কথায়, শুভেন্দু দিশা ঠিক করে দিয়েছেন। এর পরে কাজে নেমে বোঝা যাবে, সেই পরীক্ষায় উতরনো কতটা সম্ভব।