প্রতীকী ছবি।
মৃত তৃণমূল কর্মী সঞ্জিত সরকারের দেহ নিয়ে বুধবার শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাড়িতে যান জেলা সভাপতি গৌতম দাস। অন্য দিকে, গত মঙ্গলবারই ঘটনার পরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত মূল অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কালীপদ সরকার ওরফে কালীকে শ্রদ্ধা জানান তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান বিপ্লব মিত্র। দুই মৃত্যু নিয়ে দলের বিভাজন তাতে আরও স্পষ্ট হয়েছে। এ দিকে, ঘটনার পর থমথমে এলাকায় একটাই চাপা গুঞ্জন চলছে, ‘কালীর মৃত্যুর বদলা নেওয়া হবেই।’
গত মঙ্গলবার বিপ্লব ও গৌতমের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে গৌতমের অনুগামী সঞ্জিত মারা যান। অভিযুক্ত বিপ্লব অনুগামী কালীপদও হৃদরোগে মারা যান। তারপর থেকেই থমথমে হয়ে রয়েছে গঙ্গারামপুরের নারায়ণপুর। স্থানীয় সূত্রে খবর, আগে সঞ্জিত বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু গত লোকসভা নির্বাচনের পরে বিপ্লবের সঙ্গে কালীরা বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় তখন সঞ্জিত ফের তৃণমূলে ফিরে এলাকায় গৌতম দাসের অনুগামী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। কার্যত তখন থেকেই এলাকায় দাপটের সঙ্গে তৃণমূল করেছেন সঞ্জিত। সম্প্রতি বিপ্লব জেলার চেয়ারম্যান হওয়ায় কালীও স্বমহিমায় ফিরে আসেন। তারপরেই এই সংঘর্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘বছরখানেক আগে সঞ্জিত দলবল নিয়ে কালীর ছেলেকে মারধর করেছিল। সেই থেকেই সঞ্জিতের উপরে কালীর আক্রোশ। তাই ক্ষমতায় এসেই বদলা নিতে হামলা চালায় কালী। কিন্তু বয়স ও অসুস্থতার জন্য গণ্ডগোলের পরবর্তী ধাক্কা নিতে না পারায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় কালীর।’’ ওইদিনই খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান বিপ্লব। দীর্ঘদিনের সঙ্গীকে এভাবে হারাতে হবে ভাবতেও পারেননি বিপ্লব। তাই ঘটনার পর থেকে কার্যত মুষড়ে পড়েছেন এই বর্ষীয়ান নেতা। গত মঙ্গলবারই কালীর দেহ দলীয় অফিস এবং গঙ্গারামপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিপ্লব। তারপর থেকেই কার্যত গৃহবন্দী হয়ে রয়েছেন শোকে মুহ্যমান চেয়ারম্যান।
আবার এর উলটো চিত্র ধরা পড়েছে গঙ্গারামপুরে গৌতমের দলীয় অফিসে। সেখানে এক ঝাঁক তৃণমূল নেতারা জড়ো হয়েছিলেন সঞ্জিতকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। মালদহ থেকে সঞ্জিতের দেহ নিয়ে এসে দলের তরফে শ্রদ্ধা জানানোর পরে নারায়ণপুরের বাড়িতে দেহ নিয়ে যান গৌতমরা। একই পাড়ার এক প্রান্তে সঞ্জিতের বাড়ি, অন্য প্রান্তে কালীর বাড়ি। অথচ, তৃণমূল শিবির দুইভাগ হয়ে অনুগামীদের বাড়িতে যাওয়ায়, নিজেদের দ্বন্দ্ব জনসমক্ষে আরও স্পষ্ট হয়েছে। গৌতম বলেন, ‘‘সঞ্জিত দলের কর্মী ছিলেন। তাই তাকে দলীয়ভাবে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে।’’