এই সেই আমন্ত্রণ পত্র। নিজস্ব চিত্র
রবিবার শিলিগুড়ির সূর্য সেন কলোনির একটি স্কুলে ‘জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থার একাল ও সেকাল’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে। সভার আয়োজক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) পরিচালিত জাতীয়তাবাদী অধ্যাপক ও গবেষক সঙ্ঘ। সভায় উপস্থিত থাকার কথা আরএসএসের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী কার্যবাহ ভি ভাগাইয়ার। আয়োজকরা জানিয়েছেন, বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার, জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়, দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তাও আলোচনায় যোগ দেবেন। আর ওই সভা এখন রাজনৈতিক মহলে চর্চার বিষয় হয়েছে। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব বাড়ানোর কাজ শুরু করেছে বিজেপি। বিজেপি সূত্রের খবর, সঙ্ঘকে সামনে রেখে দলে শিক্ষকদের সদস্য সংখ্যা বাড়াতে চাইছেন বিজেপি নেতারা। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এর মধ্যেই খোলা হয়েছে জাতীয়তাবাদী অধ্যাপক ও গবেষক সঙ্ঘের শাখা। রবিবারের সভায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষকদের হাজির করাতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থাও।
রবিবারের আলোচনার প্রধান বক্তা পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ রায়। তৃণমূলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ইন্দ্রজিৎ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় টিচার্স কাউন্সিলের সভাপতির পদেও আছেন। সঙ্ঘ পরিচালিত আলোচনায় তাঁর প্রধান বক্তা হিসেবে যোগদান নিয়েও শোরগোল পড়েছে শিক্ষকমহলে। যদিও ইন্দ্রজিতের দাবি, ওই আলোচনাসভার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তিনি আমন্ত্রিত হিসেবেই নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর সভায় বক্তব্য রাখবেন। তিনি বলেন, ‘‘আরএসএস বা সিপিএম জানি না। আগেও বিভিন্ন সংগঠনের সভায় শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে ভাষণ দিয়েছি। এ বারেও দেব। অযথাই ওই ঘটনায় রাজনীতি যুক্ত করা হচ্ছে।’’ যদিও ইন্দ্রজিতের দাবি মানতে নারাজ তৃণমূলের শিক্ষক নেতারা। তৃণমূল পরিচালিত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন ওয়েবকুপার স্থানীয় নেতারা বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। সংগঠনের রাজ্য কমিটির এক নেতা বলেন, ‘‘আরএসএস বারবার পাঠ্যসূচিতে বদলের কথা বলছে। জোর করে ইতিহাস বদলের কথা বলছে। তাদের সভায় যাঁরা বক্তব্য রাখতে যাবেন, তাঁদের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটাই স্বাভাবিক।’’
সোশ্যাল মিডিয়াতেও ওই সভার চিঠি চালাচালি শুরু হয়েছে। চিঠি পৌঁছেছে তৃণমূলের রাজ্য দফতরেও। ওয়েবকুপার দার্জিলিং জেলা কমিটির এক নেতা বলেন, ‘‘সরাসরি রাজ্য কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন দেখভাল করে। তাই ওই বিষয়ে
আমরা কিছু বলতে পারব না।’’ সংগঠনের উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়
শাখা কমিটির আহ্বায়ক দ্যুতিষ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত ইন্দ্রজিৎ।
অসুস্থ থাকায় ওই বিষয়ে দ্যুতিষের প্রতিক্রিয়া অবশ্য জানা যায়নি। জাতীয়তাবাদী অধ্যাপক ও গবেষক সঙ্ঘের রাজ্য সম্পাদক বিনয় বর্মণ বলেন, ‘‘আলোচনা হবে। তবে সভার বিষয়ে এখনই সংবাদমাধ্যমে বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না।’’