অর্পিতা ঘোষ।
বিজেপি থেকে সভাধিপতি ও কর্মাধ্যক্ষদের পুরনো দলে ফিরিয়ে এনে জেলা পরিষদের ‘রাশ’ কয়েক মাস আগেই হাতে নিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষ। সোমবার বিজেপিতে থেকে যাওয়া তিন কর্মাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে তাঁদেরও পদ থেকে অপসারিত করে জেলা পরিষদ ‘পুরোপুরি’ পুনর্দখল করতে চলেছে তৃণমূল শিবির।
দলীয় সূত্রে খবর, বর্তমানে তৃণমূলের হাতে যে সংখ্যা রয়েছে, তাতে অনায়াসেই অনাস্থা প্রস্তাব পাশ করিয়ে নেবে তারা। তাই মঙ্গলবার কার্যত জেলা পরিষদ ‘বিজেপি-মুক্ত’ হতে চলেছে।
অর্পিতা বলেন, ‘‘বিজেপিতে যাওয়া কর্মাধ্যক্ষদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে। আমরা অনায়াসেই সেই প্রস্তাব পাশ করিয়ে নেব। গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলি ওঁরা দখল করে রাখায় কাজ করা যাচ্ছিল না। এ বার জেলা পরিষদের কাজের গতি বাড়বে।’’
দলীয় সূত্রে খবর, তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা অধুনা বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্র গত লোকসভা নির্বাচনের পরে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর সঙ্গেই জেলা পরিষদের সভাধিপতি-সহ একাধিক সদস্য বিজেপিতে সামিল হয়। তার পরেই জেলা পরিষদের দখল নেয় বিজেপি।
জেলা তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব পেয়েই অর্পিতার নেতৃত্বে একে একে জেলা পরিষদের সদস্যরা ফের দলে ফিরে আসেন। সভাধিপতি লিপিকা রায়ও কয়েক মাস আগে অর্পিতার হাত ধরে দলে ফিরেছেন। কিন্তু পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মফিজুদ্দিন মিঞা, কৃষি কর্মাধ্যক্ষ শঙ্কর সরকার ও মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ চিন্তামণি বিহা বিজেপিতেই রয়েছেন। যদিও মফিজ বিজেপি ছেড়ে বর্তমানে নির্দল হিসেবে নিজের অবস্থান জানিয়েছেন।
কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দফতর তৃণমূলের হাতে না থাকায় ‘উন্নয়নের’ কাজে থমকে গিয়েছিল বলে তৃণমূলের দাবি। উন্নয়নে গতি আনতে তাঁদের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে তৃণমূল। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মঙ্গলবার আস্থা ভোট হবে।
তাঁদের হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য না থাকায় আস্থা ভোটে যাচ্ছেন না তিন কর্মাধ্যক্ষ। মফিজের কথায়, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা সহজেই পাশ হয়ে যাবে। কারণ আমাদের হাতে সংখ্যা নেই। আমরা ভাল ভাবেই কাজ করছিলাম। দুর্নীতি বন্ধ করেছিলাম বলেই আমাদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হল।’’
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, পুরভোটের আগে জেলা পরিষদের হৃত ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করায় ‘ধাক্কা’ খেল বিজেপি। একে একে দলের সদস্যরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ায় এবং জেলা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ দফতরগুলি হাতছাড়া হওয়ায় নির্বাচনের আগে কার্যত ‘কোণঠাসা’ হয়ে পড়েছে বিজেপি।