পথে-মন্ত্রী: মিছিলে যানজট। নিজেই তাই অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য পথ পরিষ্কার করছেন রাজীব। নিজস্ব চিত্র
ঘুরেফিরে সেই পুরসভা ও মহকুমার প্রতিশ্রুতি। মহামিছিল ছিল নতুন নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র বিরোধিতায়। কিন্তু স্থানীয় মানুষের মন জয়ের লক্ষ্যে ফালাকাটাকে পুরসভা ও মহকুমা করার সেই পুরনো প্রতিশ্রুতিকেই আশ্রয় করলেন তৃণমূল নেতারা। বুঝিয়ে দিলেন, ভোটব্যাঙ্কে ধস আটকাতে এটাও দলের প্রচারে অন্যতম হাতিয়ার।
বুধবার ফালাকাটায় এই মহামিছিলে কার্যত স্তব্ধ হয়ে যায় শহরের জনজীবন। মিছিলের মধ্যেই পুরসভা ও মহকুমা নিয়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব প্রতিশ্রুতি দেন। তাঁদের কটাক্ষ করে বিরোধীরা অবশ্য আবার বলেছেন, এই দুই প্রতিশ্রুতির উপর ভর করে বিগত ভোটগুলিতে তৃণমূল বৈতরণী পেরোলেও উপনির্বাচনে তাদের জেতা কঠিন হবে।
নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে গত ২২ জানুয়ারি ফালাকাটায় দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে অভিনন্দন যাত্রা করেছিল বিজেপি। সেখানে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ২০২১ সালে রাজ্যে তাঁরা ক্ষমতায় এলে ফালাকাটাকে পুরসভা করা হবে। বিজেপির ওই অভিনন্দন যাত্রার পাল্টা হিসাবে নতুন নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির বিরুদ্ধে এ দিন মহামিছিলের ডাক দেয় তৃণমূল। সেখানেই প্রসঙ্গটি তোলেন এই উপনির্বাচনে দলের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজীব বলেন, ‘‘যারা কোনওদিন ক্ষমতাতেই আসবে না, তাদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির কোনও দাম নেই। বরং উপনির্বাচনে জিতলে ছ’মাসের মধ্যে ফালাকাটাকে আমরাই পুরসভা করব। একুশের নির্বাচনের পর ফালাকাটাকে মহকুমা করব।’’ কংগ্রেস নেতা মৃন্ময় সরকার বলেন, ‘‘রাজ্যে পালাবদলের সময় থেকে যে কোনও ভোটে তৃণমূল নেতারা ফালাকাটাকে পুরসভা ও মহকুমা করার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোট শেষ হলেই তা তাঁরা ভুলে যান।’’
এ দিন রেলস্টেশন সংলগ্ন ময়দান থেকে তৃণমূলের মহামিছিল শুরুর অনেক আগেই ফালাকাটার স্বাভাবিক জনজীবন স্তব্ধ হতে শুরু করে। ভিড়ের জেরে মাঝপথে মিছিল শেষ করে নতুন চৌপথি এলাকার জনসভায় যেতে বাধ্য হন নেতা-মন্ত্রীদের অনেকে। বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার অভিযোগ, ‘‘ফালাকাটায় মিছিলে তৃণমূল গোটা আলিপুরদুয়ারের পাশাপাশি কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি থেকেও লোক এনেছে। অসম নম্বরের গাড়িতেও তাদের লোক আসতে দেখা গিয়েছে।’’ তৃণমূল নেতা মোহন শর্মা বলেন, ‘‘মিছিলে যোগ দেওয়া ৯০ শতাংশ মানুষই ফালাকাটার বাসিন্দা। বাকি ১০ শতাংশ জেলার বাকি অংশের।’’ এ দিনের সভা থেকে আর এক মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বিজেপির কড়া সমালোচনা করেন।