মংপুতে কবি স্মরণেও ভবন নিয়ে টানাপড়েন

মংপুর বাংলোয় থাকার সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্তত ১২টি কবিতা লিখেছিলেন বলে জানা যায়। দার্জিলিং পাহাড়ের এই ছোট্ট গ্রাম কবির সঙ্গে কী ভাবে জড়িয়ে ছিল, সে সম্পর্কে নানান তথ্য মেলে মৈত্রেয়ী দেবীর লেখা ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’ বইয়েও। কবির মৃত্যুর তিন বছর পর সিঙ্কোনা বাগানের ভিতরে থাকা এই বাংলোয় ‘রবীন্দ্র সংগ্রহশালা’ তৈরি হয়েছিল। বাংলোর নাম হয় রবীন্দ্রভবন। শনিবার সরকারি উদ্যোগে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান পালিত হল এখানে।

Advertisement

রেজা প্রধান

মংপু শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৫ ০১:২৮
Share:

মংপুর রবীন্দ্রভবন। —নিজস্ব চিত্র।

মংপুর বাংলোয় থাকার সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অন্তত ১২টি কবিতা লিখেছিলেন বলে জানা যায়। দার্জিলিং পাহাড়ের এই ছোট্ট গ্রাম কবির সঙ্গে কী ভাবে জড়িয়ে ছিল, সে সম্পর্কে নানান তথ্য মেলে মৈত্রেয়ী দেবীর লেখা ‘মংপুতে রবীন্দ্রনাথ’ বইয়েও। কবির মৃত্যুর তিন বছর পর সিঙ্কোনা বাগানের ভিতরে থাকা এই বাংলোয় ‘রবীন্দ্র সংগ্রহশালা’ তৈরি হয়েছিল। বাংলোর নাম হয় রবীন্দ্রভবন। শনিবার সরকারি উদ্যোগে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান পালিত হল এখানে। যদিও মংপুর রবীন্দ্রভবন কার হাতে থাকবে তা নিয়ে টানাপড়েন এখনও অব্যাহত। শনিবার সরকারি অনুষ্ঠানে উপস্থিত উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর রবীন্দ্রভবনের রক্ষণাবেক্ষনের পুরো দায়িত্ব নেবে। সিঙ্কোনা প্ল্যান্টেশন কতৃর্পক্ষও দাবি করেছেন, ভবনের দায়িত্ব নিতে তারা রাজ্য সরকারকে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। তার উত্তর এখনও পায়নি দফতর। জিটিএ-এর তরফেও ভবনের দায়িত্ব সিঙ্কোনা কতৃর্পক্ষের হাতেই থাকুক বলে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

এ দিন রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেন, ‘‘সংগ্রহশালার অবস্থা মোটেই ভাল নয়। সংগ্রহশালা কোনও দফতরের অধীনে রয়েছে তা পরিষ্কার নয়। সম্ভবত রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর রবীন্দ্র সংগ্রহশালার দায়িত্ব নেবে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে শ্রম দফতর এবং জিটিএ-এর সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।’’ মংপুতে একটি ‘মডেল গ্রাম’ তৈরি করার কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

মংপুর বাংলোয় রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত আসবাব সহ নানা সামগ্রী রয়েছে। মংপুতে থাকাকালীন রবীন্দ্রনাথের আঁকা ছবিও রয়েছে এখানে। এই বাংলোর রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। তথ্য সংস্কৃতি দফতরের থেকে অতীতে একাধিকবার জানানো হয়েছে, রবীন্দ্রভবন দফতরের হাতে সরকারি ভাবে তুলে দেওয়া হয়নি। ২০০৯ সালের আগে রবীন্দ্রভবন শ্রম দফতরের অধীনে ছিল। তবে সংগ্রহশালাটি সিঙ্কোনা বাগানের ভিতরে থাকায়, সিঙ্কোনা কর্তৃপক্ষও রক্ষণাবেক্ষণের কিছু কাজ করে বলে জানানো হয়েছে। তিন দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের কারণেই রবীন্দ্র ভবন এবং সংগ্রহশালা বেহাল হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ। বছর দু’য়েক আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে বাংলোয় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। সংগ্রহশালার দায়িত্বে থাকা কর্মী শিশির রাহুত বলেন, ‘‘কোন দফতর দায়িত্বে রয়েছে, তা সঠিক ভাবে না জানার কারণেই নানা সমস্যা তৈরি হয়েছে। কোনও কিছু মেরামতি বা সংস্কার হলে কাকে জানাতে হবে তা নিয়েই সমস্যা তৈরি হয়।’’ শিশিরবাবু সিঙ্কোনা ডিরেক্টরেটের কর্মী।

Advertisement

সিঙ্কোনা কর্তৃপক্ষের অধিকর্তা স্যামুয়েল রাই বলেন ‘‘মাস পাঁচেক আগে রবীন্দ্রভবনের দায়িত্ব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। তার কোনও উত্তর পাইনি। আমরা শ্রম দফতরে চিঠি পাঠিয়েছিলাম। স্থানীয় বাসিন্দারাও চান রবীন্দ্রভবন সিঙ্কোনা কর্তৃপক্ষের হাতেই থাকুক।’’ জিটিএ-এ সদস্য স্যামুয়েল গুরুঙ্গও এ দিন বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব। রবীন্দ্রভবনটি জিটিএ-এর হাতে থাকলেই ভাল হয়। জিটিএ-এরও তথ্য সংস্কৃতি দফতর রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement