একদল শ্রমিকের কার্ড আছে, রেশন নেই। বাকিদের কার্ড-ই নেই। কারও বার্ধক্য ভাতার তালিকায় নাম ওঠেনি, পেনশনের তালিকায় নাম নেই অনেকেরই। এমনই না থাকার কথা শুনলেন বন্ধ পানিঘাটা চা বাগানে রবিবার বসা লোক আদালতের বিচারকেরা। অভিযোগ শুনে ক্ষুব্ধ বিচারক সাত দিনের মধ্যে পেনশন নিয়ে পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন। রবিবার সকালে মিরিক ব্লকের বন্ধ পানিঘাটা চা বাগান এলাকায় এই লোক আদালত বসেছিল। বিচারকের দুটি বেঞ্চে এলাকাবাসীর সমস্যার কথা শোনেন বিচারপতি প্রদীপ্ত রায়, প্রভাতকুমার দে, রাজেন থাপা, অ্যালভিন মিঞ্জ, ভরতকুমার গিরি ও অমিত সরকার। ছিলেন মিরিকের বিডিও পিনাকী বিশ্বাস, শিলিগুড়ির সহকারী প্রভিডেন্ড ফান্ড কমিশনার কেএন খেসাঙ্গ।
চা বাগানের বাসিন্দা দীপেন বিশ্বকর্মা, রতন লাকন্দ্রি, প্রিসিলা কিণ্ডুর মতো প্রায় দু’শো জন বাসিন্দার অভিযোগ, রেশন কার্ড থাকলেও তাঁরা সরবারাহের খাদ্যশস্য পান না। দীপেনবাবুর অভিযোগ, ‘‘কার্ড হাতে করে রেশন দোকানে গেলেও রেশন দেওয়া হয় না। কোনও সদুত্তরও মেলে না।’’ কারও ১০ বছর, কারও ১২ বছর ধরে কার্ড রয়েছে। তা সত্ত্বেও কার্ড থাকার কোনও সুবিধা পান না তাঁরা। বিডিও অবশ্য দাবি করেন, কেন শ্রমিকদের একাংশ রেশন পাচ্ছেন না তা তাঁর জানা নেই। রেশন কার্ডের আরও সমস্যা রয়েছে বলে দাবি করেন বাগানমের কর্মীরা। এক কর্মী জানান, বাগান কর্মীদের জন্য আলাদা রেশন কার্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু ওই কার্ড থাকলে খাদ্য সরবরাহ দফতরের কার্ড দেওয়ার নিয়ম নেই। ফলে গত প্রায় ৬ মাস ধরে বাগান বন্ধ থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
বাগানের প্রাক্তন কর্মী মণিকুমার থাপা বলেন, পেনশন জমা হচ্ছে না বলে অভিযোগটি সম্পর্কে সাত দিনের মধ্যে হস্তক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সাইলা ছেত্রীর ২০০২ সাল থেকে প্রভিডেন্ট ফান্ড জমাই হয়নি বলে দাবি করেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে দ্রুত পানিঘাটা চা বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিন, নিজেদের সমস্যা নিয়ে শ’তিনেক শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা লোক আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন। লোক আদালত আয়োজনের দায়িত্বে থাকা দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার বলেন, ‘‘এদিন প্রত্যেকের সমস্যার কথা শোনা হয়েছে। যাঁরা বাকি রইলেন আমরা উদ্যোগ নিয়ে অভিযোগ শুনে তা সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠাব।’’