হাসপাতালে সুব্রত বক্সি, শঙ্কুদেব পণ্ডা।
বেলা ১২টা নাগাদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক সুব্রত বক্সি জলপাইগুড়ি হাসপাতালে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক শঙ্কুদেব পণ্ডা সহ জেলা নেতৃত্ব। সেখানে তিনি দুর্ঘটনায় জখম হলদিবাড়ি এলাকায় তিন জন দলীয় কর্মীর সঙ্গে দেখা করেন। ওই সময় চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। সুব্রতবাবুর সঙ্গে শতাধিক দলীয় সমর্থক হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন। কে নেতার পাশে দাঁড়াবেন তা নিয়ে প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। এক সময় শঙ্কুদেব পণ্ডার দাদাগিরি শুরু হয়ে যায়। আইসিইউ-র সিড়িতে দাঁড়িয়ে তিনি বলতে থাকেন, “কেন সাংবাদিকরা হাসপাতালের ভিতরে। আপনারা বাইরে চলে যান।” যে দলীয় কর্মীরা ওয়ার্ডে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁদের জন্য একটি শব্দ তিনি খরচ করেননি। সুব্রতবাবু এদিন সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে বলেন, “দলনেত্রীর নির্দেশে দুর্ঘটনায় জখম দলীয় কর্মীদের দেখতে এসেছি।” এদিন হাসপাতালে হাজির ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী, জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী, জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু। সৌরভ বলেন, “জখম কর্মীদের মনোবল ফেরাতে সুব্রতবাবু জলপাইগুড়িতে এসেছেন।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, “সুব্রতবাবু চিকিৎসার সমস্ত বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন।” বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সুব্রতবাবু হলদিবাড়ির দিকে রওনা দেন। সর্বভারতীয় তৃণমূল সম্পাদক ফিরে যেতে হাসপাতালে যান দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক শৌভিক বসু।
হলদিবাড়িতে পৌঁছে পথদূর্ঘটনায় মৃত পাঁচ দলীয় কর্মীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন সুব্রতবাবু। প্রতিটি পরিবারের হাতে অর্থ সাহায্য তুলে দেন। তিনি বলেন, “আমি ওদের পাশে দাঁড়াতে এসেছি। রাজনীতি করতে আসিনি।” সুব্রত বক্সির সঙ্গে এদিন আসেন শঙ্কুদেব পন্ডা, সৌরভ চক্রবর্তী, জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু, শিলিগুড়ির কাউন্সিলার কৃষ্ণ পাল প্রমুখ।
তিনি প্রথমে হলদিবাড়ির পাঠানপাড়ায় মৃত স্বদেশ রায়ের বাড়িতে যান। স্বদেশ রায়ের স্ত্রী বাসন্তী রায় শয্যাশায়ী। তাঁর পায়ে চোট, হাতভাঙা। সুব্রতবাবু বলেন, “এক দানা খাবারও আমাদের দলের কেউ খায়, আপনারাও খাবেন।” সুব্রত বক্সির সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা চলার সময় এখানেও শঙ্কুদেব পন্ডা ঘর থেকে সমস্ত সাংবাদিকদের বার করে দেন। ছবি তুলতেও বারণ করেন।
সুব্রত বাবুর কনভয় এরপর চলে যায় সিঞ্জার হাটে অভিশপ্ত গাড়ির চালক মৃত মজিবুল হক সরকারের বাড়িতে। সেখানে মজিবুলের মা নুরজাহান বেগম এবং স্ত্রী রহিমা খাতুনকে বলেন, “আপনাদের কোন কিছুর প্রয়োজন হলে, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও বিধায়ক অর্ঘ রায়প্রধানের সঙ্গে দেখা করবেন।” পশ্চিম হেমকুমারীতে মৃত ভুদেব রায় ও দেওয়ানগঞ্জে সুশান্ত নন্দীর বাড়িতে যান। সবশেষে বটেরডাঙা গ্রামে মৃত সুবীর রায়ের বাড়িতে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক।