প্রতীকী ছবি।
ভিড় বা জমায়েত নিয়ে নয়, উদ্বেগ ছিল প্রযুক্তির ব্যর্থতায় অমিত শাহের ভার্চুয়াল সভা সকলে দেখতে পাবেন কিনা, তা নিয়েই। কিন্তু শেষপর্যন্ত প্রযুক্তি সঙ্গ দিলেও সাধারণ মানুষের তেমন সাড়া মিলল না। ফলে করোনার জেরে দিশেহারা পরিস্থিতিতে শিথিল লকডাউনে লোকজন বাইরে বেরোলেও মঙ্গলবার সভা-মুখী হলেন না তেমন কেউই। সব মিলিয়ে তাই কার্যত এই আয়োজন ‘ফ্লপ’ বলেই মনে করছেন কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলার রাজনৈতিক মহল। এমনকি, গেরুয়া শিবিরেও এই সভার সাফল্য নিয়ে তেমন উৎসাহ লক্ষ করা যায়নি।
কোচবিহার শহরে দলের অফিসগুলিতে সাজানো কিছু চেয়ার। সেখানে সকাল থেকে বসেছিলেন গুটিকয়েক মানুষ। শহরের কিছু মোড়েও বসানো হয়েছিল ল্যাপটপ। কোথাও কোথাও বড় স্ক্রিনের মোবাইল। দলীয় পতাকা হাতে নিয়েই জমা হয়েছিলেন কয়েকজন। এ দিন অমিতের ভার্চুয়াল সভার জমায়েত ছিল অনেকটা এরকমই। সভা শেষে কোনও কোনও সমর্থক বলেই ফেললেন, ‘‘খুব একটা জমল না।’’ নেতারা অবশ্য এর উত্তরে যুক্তি দিয়েছেন, এ বারেই প্রথমবার এমন সভা। ভার্চুয়াল সভায় অভ্যস্ত হতে কিছু সময় তো লাগবেই। বিরোধীদের অবশ্য বক্তব্য, মানুষ এখন হাজারও সঙ্কটে। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অনেকেই খেতে পাচ্ছেন না। অনেকেরই অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। তাই রাজনৈতিক সভা নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনও আগ্রহ নেই। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা অবশ্য বলেন, “সভা পুরোপুরি সফল। বাড়িতে বাড়িতে মানুষ ভার্চুয়াল সভায় অংশ নিয়েছেন।”
অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ারে প্রতি বুথে দশটি জায়গায় অমিত শাহের ভার্চুয়াল সভা দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে বলে দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন দলের জেলা শীর্ষ নেতারা। কিন্তু প্রায় সিংহভাগ বুথেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি বলে খোদ গেরুয়া শিবির সূত্রেরই খবর। আরও অভিযোগ, বহু বুথের নেতারা লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকও পূরণ করতে পারেননি। যা নিয়ে দিনভর গুঞ্জন চলল বিজেপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
বিজেপি সূত্রের খবর, দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা জয়গাঁর যে এলাকার বাসিন্দা সেই বুথ-সহ হাতে গোনা দু-চারটি বুথে দশ জায়গায় অমিতের ভাষণ শোনার ব্যবস্থা করেন নেতা-কর্মীরা। বাকি প্রায় সিংহভাগ বুথেই সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। বহু বুথে তো দলের নেতা-কর্মীরা দুটি, তিনটি কিংবা খুব বেশি হলে চারটির বেশি জায়গায় এই ব্যবস্থা করতে পারেননি বলে বিজেপির অন্দর থেকেই অভিযোগ উঠছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘জেলার বেশিরভাগ বুথে বিজেপির সংগঠনই নেই। মানুষও তাদের প্রত্যাখ্যান করছেন।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এই সময়ে অমিত শাহের মিথ্যে বক্তব্য শোনার আগ্রহ মানুষের নেই।”