গরুমারায় উদ্ধার হওয়া একটি গন্ডারের দেহ। ফাইল চিত্র
তিন বছরে পাঁচটি গন্ডারের দেহ মিলেছিল গরুমারায়। তারপরেও গরুমারা জাতীয় উদ্যানে গন্ডারের সংখ্যা বেড়েছে বলে দাবি করল বন দফতর। গত ফেব্রুয়ারিতে গন্ডার সুমারি হয়েছে এই এলাকায়। তার রিপোর্ট মিলিয়ে বন দফতর জানিয়েছে, গরুমারায় গন্ডারের সংখ্যা ৫২টি। বন দফতরের দাবি, সম্প্রতি জঙ্গলের বেশ কয়েকটি গন্ডার শাবকের জন্ম হয়েছে। নতুন অতিথিরাই গন্ডারকুলের সংখ্যা বাড়িয়েছে।
নানা পদ্ধতিতে গন্ডার গণনা হয়। বন দফতর এ বছরে ৫২টি গন্ডারের কথা বললেও গরুমারার গভীর জঙ্গল কতগুলি গন্ডারের বাসস্থান, তা নিয়ে এখনও পরিবেশপ্রেমীদের একাংশের সংশয় কিন্তু রয়েই গিয়েছে।
গরুমারার ডিএফও নিশা গোস্বামী জানিয়েছেন, সুমারির পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫২টি গন্ডার থাকতে পারে। দু’বছর পরপর গন্ডার সুমারি হয়। গত সুমারিতে অর্থাৎ ২০১৭ সালে গরুমারায় ৪৯টি গন্ডার রয়েছে বলে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। তারপর পাঁচটি গন্ডারের মৃত্যুর খবর মেলে। সে হিসেবে গন্ডারের সংখ্যা পঁয়তাল্লিশে নেমে আসবে। যদিও বন দফতরের দাবি, গত দু’বছর গন্ডার সংসারে নতুন সদস্যরাও এসেছে। সে কারণেই সংখ্যা বেড়েছে। উত্তরবঙ্গের মুখ্য বন্যপাল (বন্যপ্রাণী) উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, “গন্ডারের সংখ্যা বেড়েছে, এমন বলছি না। গরুমারায় গন্ডারের সংখ্যায় স্থিতাবস্থা রয়েছে তা বলা ভাল।”
গত কয়েক বছরে একাধিকবার গরুমারায় চোরাশিকারীর হানার অভিযোগ ওঠে। রাজ্যে একমাত্র গরুমারা এবং জলদাপাড়াতেই একশৃঙ্গ গন্ডারের দেখা মেলে। গন্ডার খুন করে খড়্গ লোপাট করা হয়েছে এমন অভিযোগও উঠেছিল গরুমারায়। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বরও গরুমারার জঙ্গল থেকে গন্ডারের খড়্গহীন দেহ উদ্ধার হয়। যার কিনারা এখনও বন দফতর করে উঠতে পারেনি। তার আগে ২০১৭ সালেও চোরাশিকারিদের হাতে দু’টি গন্ডারের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। সেগুলির পেছনে মূল চক্র এখনও অধরা। পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, চোরাশিকারিদের রুখতে না পারলে বর্তমানে যে ক’টি গন্ডার রয়েছে সেগুলিও নিরাপদ নয়।পরিবেশপ্রেমীদের অনেকে বন দফতরের হিসেব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। টাকাগুড়ির একটি সংগঠনের মুখপাত্র অনির্বাণ মজুমদারের কথায়, “যদি ৫২টি গন্ডার থেকে থাকে তবে সত্যি আমরা খুশি। কিন্তু বন দফতরের জানিয়েছিল দু’টি গন্ডারের জন্ম হয়েছে, আর মারা গিয়েছিল ৬টি। তাই হিসেব মেলাতে পারছি না। যাই হোক গন্ডারগুলিকে চোরাশিকারীদের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখা হোক, এটাই চাই।”