Rajbanshi School

রাজবংশী স্কুলের সরকারি স্বীকৃতি ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক

সোমবার কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানের অনুষ্ঠান থেকে একাধিক জেলার রাজবংশী স্কুলের রাজ্য সরকারের স্বীকৃতি ঘোষণা তার একটি নজির। বিরোধীরা অবশ্য স্বীকৃতি প্রাপ্ত স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৫
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

রাজবংশী স্কুলের স্বীকৃতি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা প্রকাশ্যে। তৃণমূলের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী বরাবর রাজবংশী সমাজের পাশে থাকেন। সোমবার কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানের অনুষ্ঠান থেকে একাধিক জেলার রাজবংশী স্কুলের রাজ্য সরকারের স্বীকৃতি ঘোষণা তার একটি নজির। বিরোধীরা অবশ্য স্বীকৃতি প্রাপ্ত স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণাকে ‘ভোট চমক’ বলে কটাক্ষ করছেন। সব মিলিয়ে লোকসভা ভোটের আগে রাজবংশী স্কুলের স্বীকৃতি নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে সব শিবিরই।

Advertisement

সোমবার কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজবংশী স্কুলের স্বীকৃতি ঘোষণা করে বলেন, “অনেকগুলি ছোট-ছোট রাজবংশী স্কুল ছিল। সেগুলি একটাও সরকারের বেতন পেত না। নিজেরা-নিজেরা স্থানীয় ভাবে চালাত। তারা কোনও সুযোগ পেত না। আমি আজকে এখান থেকে ২১০টি রাজবংশী স্কুলকে সরকারি স্বীকৃতি দিয়ে গেলাম।” ওই দিনই সংবাদমাধ্যমের সামনে ওই সব স্কুলের পরিকাঠামো থেকে নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। একাধিক স্কুলের ছবি দেখিয়ে তিনি অভিযোগ তোলেন, “এখানে কোনও পরিকাঠামো নেই। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বইয়ের ব্যবস্থা নেই।” সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেছেন, “চতুর্থ শ্রেণির পর ওই সব স্কুলের পড়ুয়ারা পড়বে তা স্পষ্ট নয়। এসবটাই লোকসভা ভোটের আগে চমক।”

বাম, বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজবংশীদের জন্য এত গুলি স্কুলের অনুমোদন দিয়েছেন। কোচবিহারে চিলা রায়ের মূর্তি বসেছে, পুলিশে নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন হয়েছে। গত ৩৪ বছরে তো কিছুই হয়নি। বিজেপি কেন কোচবিহারে একটা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, নারায়ণী ব্যাটেলিয়ন করতে পারল না। আগে ও সব করে দেখান।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, “বিজেপি যা বলে তা করে। যা বলা হয়েছে সব কিছু হবে। রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্য জমি না মেলাতেই সমস্যা।” তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেছেন, “এ সবই নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য অপপ্রচার। রেলের জমি পেলেও স্পোর্টস কমপ্লেক্স কেন হচ্ছে না? ওরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে চাইছে। মানুষের কাছে সবটা পরিষ্কার।”

Advertisement

রাজবংশী স্কুলের স্বীকৃতিকে স্বাগত জানিয়ে রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান বংশীবদন বর্মণ অবশ্য বলেন, “রাজবংশী ভূমিপুত্রদের যাঁরা ভাল করবেন, তাঁরাই আপন জন। মুখ্যমন্ত্রী তা করেছেন। স্বীকৃতি মেলায় এ বার স্কুলগুলির পরিকাঠামোর উন্নতিও হবে। ঘরও পাকা হবে।” রাজবংশী ভাষা শিক্ষা সংসদের মুখপাত্র ভবেশ বর্মণের অভিযোগ, “প্রকৃত স্কুলগুলি মান্যতাই পায়নি।” অভিযোগ উড়িয়ে বংশীবদন বলেন, “ওদের স্কুল থাকলে স্বীকৃতি আদায় করুক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement