গত এক সপ্তাহ ধরে জ্বরের প্রকোপ বাড়ছে শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায়। শিলিগুড়ি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিনই কয়েকশো জ্বরের রোগী আসছেন। অনেককে ভর্তি করানো হচ্ছে। বেশিরভাগই বহির্বিভাগে চিকিৎসা করাচ্ছেন। গত এক সপ্তাহ ধরেই এই পরিস্থিতি চলছে বলে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে।
শিলিগুড়ি হাসপাতালের সাধারণ বহির্বিভাগে পুরুষ এবং মহিলাদের আলাদা দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। মঙ্গলবার সাধারণ বহির্বিভাগে মহিলাদের ঘরে তিনশোর কাছাকাছি রোগী এসেছেন। পুরুষ বিভাগেও আড়াইশোর ওপরে। তাদের মধ্যে একটা বড় অংশ জ্বরের রোগী। মেডিসিন বিভাগেও রোগীর সংখ্যা ছিল তিনশোর মতো। তার মধ্যেও অর্ধেকের কাছাকাছি জ্বরের রোগী। অনেকে পেটের অসুখেও আক্রান্ত হচ্ছেন। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনাতেই এই অবস্থা বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসক মৃত্যুঞ্জয় সিংহ বলেন, ‘‘ভাইরাল ফিভার। কখনও বৃষ্টি, ঠান্ডা আবহাওয়া। আচমকা গরম। এর জন্যই ভাইরাল জ্বর বেশি হচ্ছে।’’
আক্রান্ত হচ্ছে অনেক শিশুও। আশিঘরের বাসিন্দা প্রমীলা সিংহ তার পাঁচ মাসের মেয়ে জ্বরে আক্রান্ত মানসীকে দেখাতে এনেছিলেন মঙ্গলবার। বাড়িভাসা প্রকাশনগর থেকেও জ্বরে ঐক্রান্ত মিলন মোহন্ত, ঋতিকা কুমারীকে দেখাতে এনেছেন পরিজনেরা। সকলেরই ভাইরাল ফিভার বলে চিকিৎসক জানান। শিলিগুড়ি হাসপাতালের অন্তর্বিভাগেও অন্তত ৫০ জন জ্বরের রোগী রয়েছেন।
শিলিগুড়ি হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ রয়েছে মাত্র দু’জন। কিন্তু তাঁদের পক্ষে এত সংখ্যক রোগীকে দেখা মুশকিল হয়ে পড়ছে। রোগীর চাপ সামলাতে তাই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে দু’জন চিকিৎসক দু’দিন বহির্বিভাগে রোগী দেখছেন চিকিৎসকের অভাব মেটাতে।
শিলিগুড়ি হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘আবহাওয়ার পরিবর্তনের জন্য, ঠান্ডা, গরম পরিস্থিতিতে প্রতি বছরই এ সময় ভাইরাল রোগের প্রকোপ বাড়ে। অন্য বছরের তুলনায় বাড়ছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ ডেঙ্গি বা এনসেফ্যালাইটিস সংক্রমণ নিয়েও চিন্তায় রয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। এ সময় এনসেফ্যালাইটিসের প্রকোপ শুরু হয় বলে জ্বরের রোগীদের ভালকরে পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।