মন্ত্রীর ওয়ার্ডেই পুলিশ দাবি

ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা তথা ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক সংগ্রাম সিংহরায় বলেন, ‘‘গোটা ওয়ার্ডের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে পুলিশকে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।’’ তৃণমূলের দাবি প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এলাকায় টহল বাড়ানো হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০২
Share:

গৌতম দেব।

খোদ শিলিগুড়ি শহরে পর্যটন মন্ত্রীর গৌতম দেবের বাড়ির ওয়ার্ডে পুলিশের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। এলাকায় পরপর ছিনতাই, মাদক সেবন, মদের ঠেক ও মদ বিক্রি, বাইক বাহিনী দাপট বাড়তে থাকার কথা উল্লেখ করে শুক্রবার শিলিগুড়ি পুলিশকে লিখিতভাবে ব্যবস্থা নিতে দাবি করা হয়েছে। পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি এবং কাউন্সিলর অফিসের প্রতিনিধিরা শিলিগুড়ি থানায় গিয়ে ওই লিখিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। খোদ তৃণমূল নেতারা পুলিশের নজরদারির আবেদন করায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মন্ত্রী অবশ্য বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।

Advertisement

ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা তথা ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক সংগ্রাম সিংহরায় বলেন, ‘‘গোটা ওয়ার্ডের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে পুলিশকে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।’’ তৃণমূলের দাবি প্রসঙ্গে শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এলাকায় টহল বাড়ানো হবে।’’

পুরসভার ১৭ নম্বরটি ওয়ার্ডটি শিলিগুড়ি থানার অধীনে শহরের একেবারে মাঝে অবস্থিত। কলেজপাড়া, বাঘাযতীন পার্ক, চিল্ড্রেন্স পার্ক, সুভাষপল্লি এবং হাকিমপাড়ার মতো এলাকার বড় অংশ নিয়ে ওয়ার্ডটি গঠিত। একাধিবার এই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর হয়েছেন মন্ত্রী গৌতমবাবু। বর্তমানে তাঁর স্ত্রী শুল্কাদেবী এলাকার কাউন্সিলর। কলেজ, পুরসভা, একাধিক স্কুল-সহ নানা সরকারি অফিস, ব্যাঙ্ক থাকায় দিনভর লোকজনের আনাগোনা ওয়ার্ডে লেগেই থাকে। বিকেলের পর থেকে বাঘাযতীন পার্ককে ঘিরে ফাস্ট ফুডের দোকান, একাধিক রেস্তোরাঁয় ঠাসা ভিড় থাকে। এই অবস্থায়, এলাকার অসমাজিক কাজকর্ম বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন তৃণমূল নেতারা।

Advertisement

তাঁরা জানিয়েছেন, ১১ নভেম্বর এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দুটি ব্যাগ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। বাঘাযতীন পার্কের রবীন্দ্রমঞ্চের পাশে একটি নির্মিয়মাণ বহুতলে মাদকের ঠেক বসছে। একাংশ যুবকদের আচরণের আশেপাশের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। শিলিগুড়ি কলেজের চারপাশে চা এবং পানের দোকানে মদ বিক্রি হচ্ছে। সেখানে বহিরাগতেরা ভিড় করেছেন। সঙ্গে বিকট আওয়াজ করা বাইক বাহিনীর তাণ্ডবও বেড়েছে।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, এলাকায় একসময় পুলিশের তৎপরতায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়েছিল। কিন্তু এখন টহলদারি বা নজরদারি অনেকটাই ঢিলেঢালা বলে মনে হচ্ছে। পুলিশের একাংশের নজরদারি, সঠিক তদারকির অভাবে পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে বলে ওই বাসিন্দারাই অভিযোগ করেছেন। ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা তৃণমূলের শিলিগুড়ি টাউন (১) কমিটির সভাপতি বেদব্রত দত্ত বলেছেন, ‘‘বিশেষ করে বহিরাগত একদল যুবকদের আনাগোনা বন্ধ করতে হবে। সেই কারণে আরও বিশেষ করে সন্ধ্যায় পর পুলিশের সক্রিয়তা প্রয়োজন।’’

তৃণমূলের পুলিশি নজরদারির আবেদন নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি শহরের বিধায়ক তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, ‘‘মন্ত্রীর ওয়ার্ডেই যদি এই হাল হয়, গোটা শিলিগুড়ির কী অবস্থা বোঝাই যাচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement