জাতীয় সড়কের ধসের এলাকা পরিদর্শনে দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। মঙ্গলবার। — নিজস্ব চিত্র।
খরস্রোতা তিস্তা নদীকে নিয়ে সমীক্ষা, সিকিম, কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিকল্প রাস্তা তৈরির আলোচনা চলছে। কেন্দ্রের হাতে জাতীয় সড়কটি যাবে কবে, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। এর মধ্যে দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের সংস্কারের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার বরাদ্দ করল ২২ কোটি টাকার বেশি৷ এ দিনই সিকিম, কালিম্পংগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং দার্জিলিংগামী ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক বন্ধ রয়েছে। ঘুরপথে দুই পাহাড়ে গাড়ি চলছে।
মঙ্গলবার দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা ওই জাতীয় সড়কের ধসে বিধ্বস্ত এলাকা থেকে বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এ দিন বৃষ্টি চললেও নতুন করে ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই। দুই জাতীয় সড়কেই ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার কাজ শুরু করে ত্রিপল দিয়ে ঢাকা রয়েছে। সাংসদ বলেন, ‘‘কালিম্পং ও দার্জিলিঙের টানা বৃষ্টিতে কিছু এলাকার পরিস্থিতি ভাল নয়। সরকারের নজরে সব রয়েছে। কেন্দ্র ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের জন্য ২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এর মধ্যে চার কোটি টাকা শুধু পাগলাঝোরার জন্য খরচ হবে।’’ এই সড়কের পাগলাঝোরা, মহানদী এবং তিনধারিয়া এলাকার পরিস্থিতি খুব একটা ভাল নয়। তিস্তার পরিস্থিতি বা ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিকল্প নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু না হলেও ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের সমান্তরাল বিকল্প নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, পাগলাঝোরা-সহ কিছু এলাকায় টয় ট্রেনের লাইনের অপর পাশ দিয়ে পাহাড় কেটে বিকল্প রাস্তা তৈরির জন্য রাজ্য পূর্ত দফতরের জাতীয় সড়ক শাখা ৭১ লক্ষ টাকার প্রকল্প তৈরি করেছে। বিস্তা বলেন, ‘‘বিকল্প রাস্তা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত হবে।’’
তবে সিকিমের ‘লাইফ লাইন’ এনএইচ ১০ নিয়ে কী হবে তা এ দিনও পরিষ্কার হল না। সেবকের করোনেশন সেতু থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক রংপো-মেল্লি হয়ে সিকিমে মিলেছে। এর বিকল্প রাস্তা নিয়ে সোমবার দিল্লিতে বৈঠক হয়েছে। সেখানে সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের প্রতিনিধিরা ছাড়াও, কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের আধিকারিকেরা ছিলেন। এই জাতীয় সড়ককে অধিগ্রহণ এবং তিস্তার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছে। তবে বিকল্প ‘রুট’ কোথা দিয়ে হবে, তা এখনও পরিষ্কার হয়নি। ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ছাড়াও, বাগরাকোট থেকে আলগাড়ার দিক হয়ে ৭১৭-এ জাতীয় সড়ক রয়েছে।
কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালা সুব্রমনিয়ন টি বলেন, ‘‘বিকল্প সড়ক কোথা থেকে কী হতে পারে তা নিয়ে সরকারি ভাবে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, মহানদী এলাকায় চারটি বাড়ি ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি পুরোপুরি ধসে গিয়েছে। সাংসদ পরিবারটিকে এক লক্ষ টাকা এবং বাকি তিনটি বাড়ির মালিককে ৫০ হাজার টাকা করে সাহায্য করেছেন। তেমনই ‘মডেল ভিলেজ’ বাগমারা এলাকায় ধসের ক্ষতি মিটিয়ে সংস্কারের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানান হয়েছে। ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-এর প্রধান অনীত থাপাও বিভিন্ন এলাকা নিয়ে এ দিন খোঁজখবর নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রশাসনিক কর্তারা টানা কাজ করছেন। নজরদারি বজায় রয়েছে।’’