প্রতীকী ছবি
অল্প সময়ে কোন কোন জনপ্রতিনিধি গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়েছেন? দলের দায়িত্বে যাঁরা ছিলেন তাঁদের মধ্যে কাদের আয়ের সঙ্গে সম্পত্তির হিসেব মিলছে না। আট বছরে চালচলন পাল্টেছে কাদের? দলীয় সূত্রে খবর, কোচবিহারে এমনই সব নামের তালিকা তৈরি করছে দল ও টিম পিকে। দলীয় স্তরে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাঁদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নেই তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। কারও বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ ওঠে তাহলে দল অভিযুক্তের পাশেও দাঁড়াবে না। বিশেষ করে ব্লক সভাপতি নির্বাচনের আগে এমনই নেতাদের তালিকা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। যদিও এই বিষয়ে কেউ কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “এটুকু বলতে পারি দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কারও জায়গা তৃণমূলে নেই।”
কোচবিহারে তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও একাধিক মামলাতেও অনেকে অভিযুক্ত। গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসন হাতছাড়া হওয়ার পরে কোচবিহারের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য এবং পুরসভার কাউন্সিলরেরা কাটমানির কাণ্ডে অভিযুক্ত হন। অনেকে কাটমানি ফিরিয়েও দেন। শুধু তাই নয়, একশো দিনের কাজের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগও ওঠে একাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। সিতাইয়ের একাধিক তৃণমূলনেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। দিনহাটার এক তৃণমূল নেতা ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত। একাধিক তৃণমূল নেতা অস্ত্র-সহ গ্রেফতারও হন। দল কিছু ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপি বা অন্য বিরোধী রাজনৈতিক দল কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ তুলছে তাতে খুব একটা আমল দিতে চাইছে না রাজ্যের শাসকদল। তারা নিজেদের মতো করেই একটি সমীক্ষা করছে। সেই কাজে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছে টিম পিকে। যে নেতারা দীর্ঘসময় ধরে নানা দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বা জনপ্রতিনিধি রয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষ কী বলছেন, কারও বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনও মামলা হয়েছে কিনা সে সব নথিবদ্ধ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে যে নেতারা আট-দশ বছর আগে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে ছিলেন তাঁরা কী ভাবে বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন তা খতিয়ে দেখে নাম নথিবদ্ধ করা হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতার কথায়, “আট থেকে দশ বছর একটা বড় সময়। পরিবর্তন হবে সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু তা কতটা, কী ভাবে হয়েছে তা দেখা দরকার। আর ওই নেতা বা জনপ্রতিনিধি সম্পর্কে এলাকার বাসিন্দারাই বা কী বলছেন সেটাও জানা হচ্ছে।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। সবাই তো দুর্নীতিতে অভিযুক্ত।”