ফাইল চিত্র।
এলাকায় খেলা-পাগল কে আছেন? ক্লাব অন্তপ্রাণ কার? এমন কেউ আছেন, যাঁর কাছে আশপাশের বাসিন্দারা সরকারি-বেসরকারি আবেদন লিখিয়ে আনতে যান? কাকে ছাড়া পাড়ার পুজো ভাবা যায় না? এমনই সব প্রশ্ন নিয়ে এখন জলপাইগুড়ির পাড়ায় পাড়ায় ঘুরছে পিকে-র টিম।
তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, আগামী বছর পুরভোটের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি শুরু হয়ে দিয়েছে দল। বিশেষ করে পিকে-র টিম। সেই সূত্রেই এমন সব প্রশ্ন নিয়ে ঘুরছেন সেই দলের সদস্যরা। শুধু এই ক’টি প্রশ্নই নয়, আরও বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করছেন তাঁরা। বিশেষ করে যে সব ওয়ার্ডে তৃণমূলের কাউন্সিলর রয়েছেন, সেখানে কাউন্সিলরের কাছে দিস্তা দিস্তা প্রশ্ন রাখছে পিকে-র টিম। যে ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নেই, সেখানে অন্য নেতাদের কাছে যাচ্ছেন তাঁরা। কোনও নেতা ঠিক তথ্য দিলেন কিনা, তা যাচাই করতে ওই এলাকার অন্য নেতার কাছেও রাখা হচ্ছে একই প্রশ্ন। তৃণমূলের ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর তথা পিকে-র দলের তিন সদস্য মাস দুয়েক ধরে ঘুরে ঘুরে এই তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সাধারণ বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলে এমন সব প্রশ্ন রেখেছিলেন তাঁরা।
শহরের এক তৃণমূল কাউন্সিলরের কথায়, “প্রশ্নের ধরনও বেশ অন্যরকম। আমার কাছে তো জানতে চাইল, এলাকায় এমন কে আছে যে সুদে টাকা ধার দেয়!” বিরোধী দলের সম্পর্কেও তৃণমূল নেতাদের কাছে বিভিন্ন তথ্য চাইছে পিকে-র দল। বিরোধী দলগুলির কোন কর্মী বা নেতাকে দলে নিলে পুরভোটে দলের সুবিধে হবে, জানতে চাওয়া হচ্ছে সেই তথ্যও। পাড়ায় পাড়ায় যাঁরা গৃহশিক্ষকতা করেন, তাঁদের সকলের মোবাইল নম্বরও নিয়েছে তারা।
জেলা তৃণমূলের দাবি, এ বারের পুরভোটে দলের প্রচার অন্যভাবে হবে। লোকসভা ভোটের নিরিখে জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডেই তৃণমূল পিছিয়ে ছিল বিজেপির থেকে। কোনও কোনও ওয়ার্ডে তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছিল তৃণমূল। তাই আগামী বছর পুরভোটের আগে ক্ষত মেরামত জরুরি। দলের অনুমান, অরাজনৈতিক ভাবে প্রচার চালাতেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনসংযোগে যক্ত লোকেদের তালিকা তৈরি করছে পিকে-র দল। দলের সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে তাঁদের থেকে মতামত নেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। আবার অরাজনৈতিক স্বচ্ছ ভাবমূর্তির লোকেদের প্রার্থী করা হতে পারে বলেও দলের একাংশ মনে করছে। সে ক্ষেত্রে পুরনো কাউন্সিলরদের কারও কারও কপালে হয়তো আর দলের টিকিট জুটবে না।
জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর মন্তব্য, “পিকে-র দল নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। পুরভোটের দলীয় প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি এলাকার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।”