প্রতীকী ছবি।
স্কুল-সহ গোটা গ্রামকে প্লাস্টিকমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। প্লাস্টিকজাত বর্জ্য স্কুলে জমা দিলে ভর্তির ফি-তে দেওয়া হয়েছিল ছাড়। শুধু তাই নয়, ছাত্রছাত্রীরা তাদের বাড়ি ও গ্রাম থেকে প্লাস্টিকের খালি বোতল সংগ্রহ করেছিল। সেগুলিই মাপমতো কেটে তার মধ্যে স্কুলে জমা করা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ভরে তৈরি করা হল পরিবেশবান্ধব ইট— ‘ইকো ব্রিক’।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই ইটে গ্রিনহাউস, গ্রিন ওয়াল, টব, ঝুলন্ত ফুলের বাগান তৈরি করা হয়েছে। সে সব টবে লাগানো হয়েছে বাহারি ফুলের গাছ। প্লাস্টিকমুক্ত সমাজ গড়তে এমন উদ্যোগের কথা পুদুচেরির একটি সংস্থার কাছে পাঠিয়েছিলেন মালদহের শোভানগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কাজের জন্য মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের সহযোগিতায় চলা সেই সংস্থার তরফে ‘টিচার্স ন্যাশনাল আওয়ার্ড অন ইনোভেশন’ সম্মান পেতে চলেছেন হরিস্বামী। ১ মার্চ দিল্লিতে তাঁকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। ওই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কাজের জন্য বেছে নেওয়া ৫৮ জন শিক্ষককে সংবর্ধনা দেওয়ার কথা কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী রমেশ পোখরিয়ালের।
ওই সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সাল থেকে ওই সংস্থা শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন চিন্তাধারা বা উদ্ভাবনী কাজের জন্য দেশের বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষকদের তরফে পাঠানো বিভিন্ন ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে আসছে। মূলত ‘জিরো ইনভেস্টমেন্ট ইনোভেশন ফর এডুকেশন ইনিশিয়েটিভস’-এর ভাবনায় ওই সম্মান জানানো হয়। ২০১৯ সালে দেশের ৬২ জন শিক্ষক এই সম্মান পেয়েছিলেন। এ বছরে দেশের ৩ লক্ষ ৬২ হাজার শিক্ষক আবেদন জমা দিয়েছিলেন। তার মধ্যে ৫৮ জন শিক্ষকের ভাবনা পুরস্কারের জন্য বিবেচিত হয়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের শোভানগর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস।
তিনি বলেন, ‘‘স্কুল-সহ গোটা শোভানগর গ্রামকে প্লাস্টিক বর্জিত করতে গত বছর পরিবেশ দিবসে ছাত্রছাত্রীসহ শিক্ষকেরা শপথ নিয়েছিলাম। স্কুলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, কোনও পড়ুয়া ভর্তির সময় প্লাস্টিকজাত বর্জ্য এনে স্কুলে জমা দিলে ভর্তির ক্ষেত্রে ফি-তে ছাড় দেওয়া হবে।’’
তিনি জানান, সেই মতো কাজও হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ থেকে শুরু করে প্রচুর প্লাস্টিকের খালি বোতল জমা দিয়েছিল। সে সব দিয়েই ‘ইকো-ব্রিক’ তৈরি করা হয়েছিল। পাশাপাশি কিছু বোতল কেটে তাতে লাগানো হয়েছিল বিভিন্ন ফুলের গাছ। ওই ইকো ব্রিক দিয়ে স্কুল ভবনের ছাদে তৈরি করা হয়েছে গ্রিনহাউসও।