২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে আন্দোলনে নামলেন আলিপুরদুয়ার জেলার একাধিক চা বাগানের শ্রমিকেরা। এর মাঝেই আজ শনিবার, বোনাস সমস্যা মেটাতে ‘ডুয়ার্স কন্যা’য় ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকল শ্রম দফতর। রবিবারও হবে এই বৈঠক। ইতিমধ্যে জেলার অধিকাংশ চা বাগানে মালিক পক্ষ ১৯ শতাংশ বোনাস ঘোষণার পরে সমস্যা মিটলেও, কিছু বাগান এখনও সঙ্কটে।
জেলার নিমতিঝোরা, চুয়াপাড়া, মুজনাই, কালচিনি রায়মাটাং, দলসিংপাড়া-সহ একাধিক বাগান রয়েছে এই তালিকায়। জেলা শ্রম দফতরের এক আধিকারিক জানা, বোনাস সমস্যা সমাধানের জন্য ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ওই সভা থেকেই সমস্যার সমাধান হবে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, ‘‘চা শ্রমিকদের বোনাস সমস্যা সমাধানের জন্য শ্রম দফতরের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। আমরা চাইছি, চা শ্রমিকদের কথা ভেবে দ্রুত বোনাস সমস্যার সমাধান করা হোক।’’ একই কথা বলেছেন সিটুর আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ গুণ।
এ দিকে, টানা আন্দোলনের জেরে, কালচিনি ব্লকের নিমতি চা বাগানে শ্রমিকদের বোনাসের দাবি মানতে রাজি হলেন না বাগান কর্তৃপক্ষ। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ২০ শতাংশ না, ১৯ শতাংশ বোনাস দেওয়া হবে। অন্য দিকে, ব্লকের দলসিংপাড়া ও তোর্সা চা বাগানেও ২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভ-অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র বারা ওরাওঁ বলেন, ‘‘দলসিংপাড়া চা বাগানে এ বছর ৮.৩৩ শতাংশ বোনাস দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। স্বাভাবিক ভাবেই এটা কেউ মানবে না।’’ বোনাসের দাবিতে শুক্রবার দলমোড় চা বাগানেও গেট-বৈঠক করলেন শ্রমিকেরা। তাঁদের অভিযোগ, অন্য বাগানগুলিতে ১৯% বোনাস দিলেও, তাঁদের মাত্র ৮% বোনাস দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি বিষ্ণু ঘটনির অভিযোগ, ‘‘এ ভাবে শ্রমিকদের বোকা বানানো হচ্ছে! আমরা আর চুপ থাকবো না।’’
এ দিকে, মহালয়ার আগেই ডুয়ার্সের মালবাজার ব্লকের সাইলি চা বাগান ও নাগরাকাটা ব্লকের নয়াশালী বাগান বন্ধ হয়ে গেল। যার জেরে, পুজোর মুখে রোজগার হারালেন অন্তত দু’হাজার শ্রমিক। বন্ধ হয়ে গেল মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের মুজনাই চা বাগানও। অভিযোগ, বোনাসের দাবিতে বিক্ষোভের জেরেই শুক্রবার ভোরে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্কের’ নোটিস ঝুলিয়ে বাগান ছেড়ে চলে যান কর্তৃপক্ষ। ‘ডুয়ার্স চা বাগান ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক গোপাল প্রধান বলেন, ‘‘এ ভাবে পুজোর মুখে বাগান বন্ধ হয়ে যাওয়া দুর্ভাগ্যজনক। আমরা চাইছি, বাগানটি তাড়াতাড়ি খুলে যাক।’’