—প্রতীকী চিত্র।
বৃষ্টিতে যেন ‘বসন্ত’ এল চা বাগানে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে জলপাইগুড়ি তথা ডুয়ার্সে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। বুধবার দিনভর ছেঁড়া ছেঁড়া বৃষ্টি হয়েছে ডুয়ার্স জুড়ে। বুধবার সন্ধের পর থেকে ফের ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টি হয়েছে। চৈত্রের এই ঝড়-বৃষ্টিতে চা মহল্লায় খুশির হাওয়া। জমতে থাকা ধুলো বৃষ্টির জলে ধুয়ে গিয়ে কচি সবুজ চা পাতার দেখা মিলেছে বাগানে। ‘প্রথম ফ্লাশ’-এর পাতার উৎপাদন ইতিমধ্যেই কমেছে। তবে বসন্তের বৃষ্টি আশা দিচ্ছে ‘দ্বিতীয় ফ্লাশ’-কে। এপ্রিলের দ্বিতীয় শেষ সপ্তাহ থেকে ‘দ্বিতীয় ফ্লাশ’-এর চা পাতা তোলা হবে।
শীতের শেষ থেকেই বৃষ্টি পায়নি চা গাছের মাটি। শুকিয়ে খটখটে হয়ে গিয়েছিল কালো মাটি। ডুয়ার্সে বড়-ছোট প্রায় বেশিরভাগ চা বাগানেই গাছে জল দেওয়ার পরিকাঠামো থাকলেও তা দিয়ে বৃষ্টির ঘাটতি পূরণ সম্ভব নয়। বৃষ্টি না হওয়ায়, শীতের শেষে তাপমাত্রাও হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছিল। তার ফলে চা পাতার বৃদ্ধি কমে যায়। চা পর্ষদ যখন থেকে চা পাতা তোলার নির্দেশ দেয়, তখনও ডুয়ার্সের গাছে দু’টি পাতার সঙ্গে একটি কুঁড়ি আসেনি। এ বারের মরসুমের শুরুতে দেরিতে পাতা তোলা শুরু হয়। যে পাতা তোলা হয় তার মানও খারাপ হচ্ছিল। ‘প্রথম ফ্লাশ’-এর উৎপাদন অনেকটাই কমে যায়। চা বাগান পরিচালকদের সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডুয়ার্স শাখার চেয়ারম্যান জীবনচন্দ্র পান্ডে বলেন, “এই বৃষ্টি সুখবর নিয়ে এসেছে উত্তরবঙ্গের চায়ে। পাহাড়েও বৃষ্টি হচ্ছে। এতে পাতার উৎপাদন বাড়বে।”
গত বছরের পুরোটাই আবহাওয়ার খামখেয়ালে চা উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। চা পাতার মানও ভাল ছিল না বলে বছরের মাঝামাঝি থেকে নিলামেও দাম মেলেনি। চা শ্রমিকদের দাবি, শীতের পরে, দু’এক পশলা বৃষ্টিতে চা গাছ ডাঁটো হয়, পাতায় রস আসে। তাতেই স্বাদ এবং রং ধরে চা পাতায়। বৃষ্টির অভাবে প্রথম ফ্লাশের চা পাতার উৎপাদন যেমন কমেছে, তেমনই পাতাও গিয়েছে শুকিয়ে, দাবি চা মহল্লার। ছোট চা বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “এই বৃষ্টি চায়ের জন্য আশীর্বাদ। প্রথম ফ্লাশের অর্ধেকই প্রায় শেষ। আশা করি, দ্বিতীয় ফ্লাশের মান ভাল হবে।”