শীতকালে চলছে চা গাছের পরিচর্যা। আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে
বাড়ির উঠোনে একচিলতে চা-বাগান। এ বার সেই ছোট্ট চা-বাগান নিয়েও ভাবছে চা-পর্ষদ। তৈরি হল ছোট চা-বাগানগুলিকে নিয়ে কোর কমিটি। চা-পর্ষদের এই ঘোষণাকে চা-শিল্পের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন ‘ছোটদের স্বীকৃতি’ বলে অভিহিত করছেন। দেশের মোট চা উৎপাদনের ৫১ শতাংশেরও বেশি ছোট বাগান থেকে আসছে। তাই ছোট বাগানকে সরিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করা হচ্ছে। চায়ের বর্তমান পরিস্থিতি বুঝতেও ছোট বাগানের পরিস্থিতি নিয়ে চর্চা জরুরি। দেশের চা-বিষয়ক সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা চা-পর্ষদ তথা টি বোর্ড অবশেষে ছোট চা-বাগানের জন্যও পৃথক শাখা খুলল। ছোট বাগানকে গুরুত্ব দেওয়ার বার্তাই দেওয়া হল কোর কমিটির কাঠামোয়। কমিটির মাথায় থাকছেন টি-বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান, যিনি টি-বোর্ডের মূল পরিচালক।
কয়েক দশক ধরেই ছোট চা-বাগানের প্রচলন উত্তরবঙ্গে। উত্তর দিনাজপুর, কোচবিহারের মতো জেলা, যেখানে বড় চা-বাগান নেই, শয়ে শয়ে ছোট চা-বাগান তৈরি হয়েছে। উত্তরবঙ্গ ছাড়াও অসম এবং দক্ষিণে নীলগিরিতে ছোট বাগান রয়েছে।
চা-পর্ষদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশের মোট উৎপাদিত চা প্রায় ১৩৪ কোটি কেজি। এর মধ্যে ছোট বাগানে থেকে এসেছে ৫৮ কোটি কেজিরও বেশি চা। বেশ কয়েক বছর ধরেই ছোট বাগানের উৎপাদন বাড়ছে। এই প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার চা-পর্ষদের উন্নয়ন বিভাগের অধিকর্তা নির্দেশিকা জারি করে ছোট বাগানের জন্য কোর কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। কমিটিতে এ রাজ্যের উত্তরবঙ্গ, অসম এবং দক্ষিণের রাজ্যগুলি থেকে নিয়ে আট জন প্রতিনিধি রয়েছেন। ছোট চা-বাগানের সর্বভারতীয় সংগঠন ‘সিস্টা’র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তীও সেই কমিটিতে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই কমিটি গঠনের প্রয়োজন আগেই ছিল। ছোট বাগানকে বাদ দিয়ে চা নিয়ে নীতি নির্ধারণ সম্ভব নয়।’’ দশ হেক্টরের বেশি বড় নয়, এমন বাগান নিয়ে নীতি প্রচলন করবে টি-বোর্ডের নতুন কমিটি। ছোট বাগানের পাতার গুণমান, চাষপদ্ধতি, বিপণনের নতুন নীতিও ঘোষণা করতে পারে টি-বোর্ড।