শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল ছবি।
নাবালিকাকে ধর্ষণ, খুনের ঘটনার জেরে শনিবারও সকাল থেকে উত্তেজনা ছড়াল আলিপুরদুয়ারের ওই এলাকায়। নাবালিকার দেহ উদ্ধারের পরে শুক্রবারই গণপিটুনিতে এক অভিযুক্তের মৃত্যু হয়েছিল। ধৃত অন্য অভিযুক্তের ফাঁসির দাবিতে এ দিন ওই এলাকার রাজ্য সড়ক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীরা। এলাকার দোকান, বাজারও ছিল বন্ধ। পুলিশি তদন্তের উপরে তাঁদের বিশ্বাস নেই বলে সরব হন গ্রামবাসীদের অনেকে। ধৃত অভিযুক্তকেও তাই তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা। অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলতে যান ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ আধিকারিকেরা। অভিযোগ, সেই সময় ওই আধিকারিকদের ঘিরেও বিক্ষোভ দেখানো হয়।
এ দিকে, শুক্রবার রাতেই মূল অভিযুক্তের ঘর ভেঙে দেয় উত্তেজিত জনতা। তার জেরে অভিযুক্তদের বাড়িতে রয়েছে পুলিশ পিকেট। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুই অভিযুক্তের উপরে ওই ঘটনার অনেক আগে থেকেই গ্রামবাসীদের একাংশে ক্ষোভ ছিল।
এ দিন ওই এলাকায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে শামিল হন জেলারই অন্য এক নির্যাতিতার বাবা। আলিপুরদুয়ার জেলার যে গ্রামে শুক্রবার নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছে, ঠিক তার পাশের গ্রামে ২০১৯ সালে দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে নিখোঁজ হয়েছিল এক নাবালিকা। দশমীর সকালে চাষের জমি থেকে তার দেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। নির্যাতিতার পরিবার জানায়, তার মধ্যে এক জন জামিনে ছাড়া পেয়েছে। সেই নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আদালতেই শুধু ঘুরছি। ক্যালেন্ডারে তারিখ পরিবর্তন হচ্ছে, কিন্তু বিচার পাচ্ছি না। আমার সামনে এক অপরাধী বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জানি না, কবে বিচার পাব!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘এ দিন যখন জানতে পারলাম, একই ভাবে একটি ফুটফুটে মেয়েকে মেরে ফেলা হয়েছে, আমি আর নিজেকে ঘরে আটকে রাখতে পারিনি। এই ঘটনার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভে শামিল হয়েছি।’’
এ দিন সন্ধ্যায় ওই এলাকায় যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা সেখানে পৌঁছনোর আগেই স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতির নেতৃত্বে মোমবাতি মিছিল করা হয়। শুভেন্দু বলেন, ‘‘যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা করার ভাষা নেই। পরিবার চাইলে আমরা ওঁদের আইনি সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’’ এ দিন শুভেন্দু সেখান থেকে বেরিয়ে যেতেই ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা।