স্বাগত: বালুরঘাটের সভামঞ্চে শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদারকে মালা পরানো হচ্ছে। মঙ্গলবার। ছবি: অমিত মোহান্ত
রাজ্যের সব জায়গায় আবাস যোজনা নিয়ে সরব হচ্ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু রাজ্য বিজেপি সভাপতির এলাকা বালুরঘাটে এসেই সুর বদলাল তাঁর। আবাস যোজনা এবং পঞ্চায়েতে দুর্নীতির প্রক্ষিতে খোলা মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন, ‘বড় চোরদের’ ধরবেন তিনি আর সুকান্ত মিলে।
সুকান্তও জানিয়ে দেন, তিনিও মাস্টারমশাই। ‘দুষ্টু ছাত্রদের’ টাইট দিয়েই ছাড়বেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে, কেন শুভেন্দু অধিকারীকে আনতে হল রাজ্য সভাপতির গড়ে তা নিয়ে অবশ্য দলের অন্দরেই নানা ব্যাখ্যা রয়েছে। সম্প্রতি সুকান্তের কয়েকটি সভায় লোক হচ্ছিল না বলেও দাবি দলীয় সূত্রে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এর আগে ভাষণ দিতে গিয়ে একাই লড়াকু মনোভাব দেখিয়েছিলেন শুভেন্দু। কোথাও রাজ্য বিজেপি সভাপতির নাম করতে শোনা যায়নি বলেই দলীয় সূত্রে দাবি। কিন্তু বালুরঘাটে এসে কী এমন হল, শুভেন্দু-সুকান্ত জুটি গড়ে লড়ার ডাক দিলেন তিনি? সুকান্তর এলাকা বলেই কি তাঁকে খানিকটা জায়গা দেওয়ার চেষ্টা হল? তা অবশ্য সুকান্ত নিজে মানছেন না। তাঁর দাবি, ‘‘দল এবং পরিষদীয় দল দু’টি আলাদা। আমি আর সুকান্ত বলতে দল এবং পরিষদীয় দল মিলে লড়াইয়ের কথাই বোঝাতে চেয়েছেন শুভেন্দুদা। যেখানে তিনি একা বক্তব্য রেখেছেন, সেখানে তো পরিষদীয় দলের কথাই বলবেন।’’
দলের একটি অংশের দাবি, রাজ্য সভাপতি হওয়ার পরে সুকান্ত শুভেন্দুর কাঁথির বাড়িতেও যান। কিন্তু বিরোধী দলনেতা হওয়ার পরে এ দিন বালুরঘাটে এসে রাজ্য সভাপতির বাড়ি যাননি শুভেন্দু। তপনের বিজেপি সাংসদ বুধরাই টুডুর পিতৃবিয়োগ হয়েছে। তাঁর বাড়ি যান সবাই। বিজেপি সূত্রের খবর, গত ২৭ ডিসেম্বর হরিরামপুরের সভায় জনা পঁচিশ লোক দেখে মেজাজ হারান সুকান্ত। পরে, মঙ্গলবারের প্রস্তুতিসভাতেও বালুরঘাট বাসস্ট্যান্ডে কম লোক থাকার জন্য সভা এড়িয়ে যান তিনি।
এ দিন মঞ্চে দুই নেতাই দুর্নীতির অভিযোগে গলা ফাটান। সুকান্ত বলেন, ‘‘এর আগে, দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার এবং অর্পিতা ঘোষ মিলে পঞ্চায়েত দখল করেছেন। আমিও মাস্টারমশাই। অনেক খারাপ ছাত্রকে টাইট দিয়েছি। উঁচুতলার পুলিশকে টাইট দিতে সময় লাগবে না। মনোনয়নে আমি থাকব। দেখি, কোন তৃণমূল মনোনয়ন ছেঁড়ে!’’ যদিও অর্পিতা এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাজে কথা। মানুষ বিজেপিকে ভোট দেয়নি। দখল করব কেন?’’