(বাঁ দিক থেকে) জীবেশ, দিলীপ, সূর্যকান্ত ও অশোক।—নিজস্ব চিত্র
কমিশনের ভরসায় থাকলে হবে না, বুথ রক্ষার দায়িত্ব কর্মীদের নেওয়ার জন্য আহ্বান জানালেন সূর্যকান্ত মিশ্র। মুখ্যমন্ত্রীকে শূন্য রানে আউট করার ডাক দিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে এসে কর্মী-সমর্থকদের ভোট নিয়ে শেষ মুহূর্তের নির্দেশ দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক তথা বিরোধী জোটের অন্যতম কারিগর সূর্যবাবু। বৃহস্পতিবার ধূপগুড়ি, রাজগঞ্জ এবং ডাবগ্রামে পরপর তিনটি প্রচার সভা করেন সূর্যবাবু। আমবাড়ির সভা মঞ্চে বাম নেতাদের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেতারাও। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার থেকে শুরু করে জলপাইগুড়ি বিধানসভার কংগ্রেস প্রার্থী সুখবিলাস বর্মাও বক্তব্য রাখেন। আমবাড়ি তারঘেরা মাঠে এ দিন কানায় কানায় ভরা দেখে নেতারাও উৎসাহিত হয়েছেন। সুখবিলাসবাবু এ দিন সভা মঞ্চ থেকেই সূর্যবাবুকে ‘ভাবী মুখ্যমন্ত্রী’ বলে সম্বোধনও করেছেন। এ দিন দূরদুরান্ত থেকে সমর্থকরা যে গাড়িতে এসেছেন সেগুলিতেও লাল ঝান্ডার সঙ্গে কংগ্রেসের তেরঙ্গা বাঁধা ছিল। তবে জোটের আবেগকে শুধু জনসভায় সীমিত না থেকে ভোটের দিন বুথ পর্যন্ত যেন নিয়ে যাওয়া যায়, সে কথা এ দিন বারবার সূর্যবাবুর বক্তব্যে শোনা গিয়েছে। রাজ্যে গত দু’দফার ভোটের উদাহরণ টেনে সূর্যবাবু অভিযোগ করেন, আগের দুই ভোটে রাস্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী দেখা যায়নি, তবু মানুষরা জোট বেধে তৃণমূলের সন্ত্রাসের চেষ্টা রুখেছিল। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘কমিশনকে আমরা অনেক অভিযোগ জানিয়েছি, তারা কী করবে আমরা জানি না। কিন্তু শুধু কমিশনের ওপর ভরসা করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। সকলে মিলে জোট বেঁধে বুথ পাহারা দিন। তৃণমূল হামলা চালাতে এলে সকলে মিলে প্রতিরোধ করুন।’’
ভোটের দিন যারা এজেন্ট থাকবেন, তাঁরা যেন ভয় অথবা টাকার প্রলোভনের ফাঁদে পা না দেন তার দিকেও সর্তক নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সূর্যবাবু। বিক্ষুব্ধ তৃণমূল সমর্থকদেরও নিজেদের দিকে টানার চেষ্টা করেছেন তিনি। তৃণমূলের সকলে ‘চোর’ এমন কথা বা স্লোগান না দিতে কর্মীদের তিনি নিষেধ করেন। সাধারণ তৃণমূল কর্মীদেরও জোটে সামিল করতে হবে বলে এ দিন জানিয়েছেন সূর্যবাবু। তিনি বলেন, ‘‘নেতানেত্রীদের দূর্নীতি দেখে সাধারণ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা লজ্জিত। তাঁদের অনেকে বলেছেন, ভোটের পরে আমাদের সঙ্গে আসবেন। তাঁদেরকেও কাছে টানতে হবে। জোটকে বাড়াতে হবে।’’
এ দিনের সভার পরে জোট নিয়ে বাম-কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহও চোখে পড়েছে। রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা থেকে আসা একদল কংগ্রেস কর্মী সিপিএম নেতাদের থেকে চেয়ে কাস্তে হাতুড়ি তারা প্রতীক দেওয়া ঝান্ডা নিয়ে গেলেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার বলেন, ‘‘জোট যে ওপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া হয়নি, এ সব ছোট ঘটনাই তার প্রমাণ। দলের ভোটারদের রাজগঞ্জে কাস্তে হাতুড়ি তারায় ভোট দিতে হবে বোঝাতেই, কর্মীরা সিপিএমের পতাকা চেয়ে নিচ্ছেন।’’