টানা বৃষ্টিতে আবার জলমগ্ন হওয়ায় শিলিগুড়িতে ক্ষোভ

দু’দিন বৃষ্টির দাপট একটু কম থাকায় জমা জল পুরোটাই প্রায় নেমে গিয়েছিল শিলিগুড়ি শহর থেকে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে ফের নতুন করে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শিলিগুড়ি ও লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা। একাধিক এলাকা জলের তলায়। কোথাও বাড়িতে জল ঢুকছে, আবার কোথাও রাস্তা ও নর্দমা মিলেমিশে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৭:৪২
Share:

জল ভেঙেই যাত্রা। ব়ৃষ্টির জেরে পাড়ার রাস্তায় এভাবেই চলছে যাতায়াত।

দু’দিন বৃষ্টির দাপট একটু কম থাকায় জমা জল পুরোটাই প্রায় নেমে গিয়েছিল শিলিগুড়ি শহর থেকে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে ফের নতুন করে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শিলিগুড়ি ও লাগোয়া বিস্তীর্ণ এলাকা। একাধিক এলাকা জলের তলায়। কোথাও বাড়িতে জল ঢুকছে, আবার কোথাও রাস্তা ও নর্দমা মিলেমিশে গিয়েছে।

Advertisement

দুপুরে বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরেও সন্ধ্যা পর্যন্ত জল নামেনি শহরের একাধিক জায়গাতেই। যার ফলে ক্ষোভে ফুঁসছেন শিলিগুড়ি শহরের ভুক্তভোগী বাসিন্দারা। শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা নান্টু পাল পুর পরিষেবার বেহাল অবস্থার জন্য সিপিএম পরিচালিত পুরসভাকেই দায়ী করেছেন। যদিও মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বা ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাত মনে করেন পুরসভা তার দায়িত্ব পালন করছে।

বিরোধী দলনেতা নান্টু পালের অভিযোগ, ‘‘পুরসভার মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বিরোধীদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করেন না। নিজেদের মত পুরসভা চালাচ্ছেন। যার ফলে পুর পরিষেবা বেহাল হয়ে রয়েছে।’’ পুরসভার টাস্ক ফোর্স কী কাজ করছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। যদিও এত অধিক পরিমাণে বৃষ্টি হলে জল জমা আটকানো কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছেন মেয়র অশোক ভট্টচার্য। তবে বৃষ্টি থামার পরে দু’একটি জায়গা ছাড়া বেশিরভাগ জায়গা থেকেই জল নেমে গিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘আমরা বিভিন্ন জায়গায় নিকাশি নিয়ে কাজ করেছি বলেই সমস্যা ভয়াবহ হয়নি। লাগাতার বৃষ্টি হলে জল নীচু এলাকাতে জমেই। কিন্তু বৃষ্টি থামার পরে শহরে দুটি জায়গা ছাড়া বাকি সমস্ত জায়গায় ঘন্টাখানেকের মধ্যে নেমে গিয়েছে।’’

Advertisement

তবে মেয়র টাস্ক ফোর্স কাজ করছেন বলে দাবি করলেও ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতের দাবি, অভিযোগ জানিয়ে পুরসভায় ফোন করে টাস্ক ফোর্সকে এখনও তেমনভাবে কেউ ডাকেনি। তাই টাস্ক ফোর্স কাজে নামছে না। তবে যেকোনও সমস্যার মোকাবিলায় পুরসভার টাস্ক ফোর্স প্রস্তুত বলে দাবি করেন তিনি। রামভজনবাবুর দাবি, ‘‘পুরসভা প্রস্তুত। আমাদের তরফে কোনও খামতি নেই। কেউ ডাকলেই পৌঁছে যাবেন তাঁরা।’’

শিলিগুড়ি পুর এলাকার ৩১ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের অশোকনগর, নিউ মিলনপল্লি, সুকান্তপল্লি, শক্তিগড় এলাকাগুলি অন্য জায়গার থেকে তুলনামূলক নীচু জায়গা। বর্ষার মরসুমে এই এলাকাগুলিতে প্রতিবছরই জল জমে। এ দিনও রাত থেকে টানা বৃষ্টির জেরে হাইড্রেন উপচে রাস্তায় জল উঠে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। অশোকনগর, নিউ মিলনপল্লি এলাকায় অনেক বাড়িতেও জল ঢুকে পড়ে। যার ফলে অনেকেই খাটের উপরে জিনিসপত্র তুলে রাখতে বাধ্য হয়েছেন। অশোনগরের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ চাকলাদার, ঝুমা মহন্তরা জানান, শেষ রাত থেকেই জল ঢোকা শুরু করেছিল বাড়িতে। বেলা বাড়তে জলের স্তরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। শিলিগুড়ি পুর এলাকার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর, ৩৭ নম্বরের সারদাপল্লি, জলপাইমোড় লাগোয়া শীতলাপাড়া, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাজীবনগর, সমরনগর-সহ তেলিপাড়া এলাকায় বহু ঘর জলমগ্ন হয়ে পড়ে। রাস্তা জলের তলায় চলে গিয়েছিল শিলিগুড়ি ইস্টার্ন বাইপাস লাগোয়া ফকদইবাড়ি, মাঝাবাড়ি, ফারাবাড়ি এলাকাগুলিতে।

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement