সাফল্য: ফল জানার পরে বাবা-মায়ের সঙ্গে রচয়িতা।—নিজস্ব চিত্র।
অল্পের জন্য মেধা তালিকায় এক থেকে দশে না থাকতে পারার জন্য আফশোস করতে হচ্ছে শিলিগুড়ি দুই কৃতী ছাত্র ছাত্রীর। শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের প্রীতম দাস এবং শিলিগুড়ি গার্লস স্কুলের ছাত্রী রচয়িতা দাস। তাদের দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৯। রাজ্যে মেধা তলিকায় দশম স্থান অধিকারীরা পেয়েছে ৬৮১ নম্বর। দুই নম্বরের জন্য তারা মেধা তালিকাতে জায়গা না-পাওয়ায় স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকারাও আফশোস করছেন। দার্জিলিং জেলার মেধা তালিকায় অবশ্য তারাই সেরা।
টেস্টের ফলে প্রীতম স্কুলের ১০ জন ছাত্রের মধ্যে ছিল না। যদিও তাদের সেকশনে প্রীতমই প্রথম হত বলে জানিয়েছে। তার কথায়, ‘‘টেস্টের ফল ভাল না-হওয়ায় পড়াশোনায় জোর দিয়েছিলাম। আশা করেছিলাম এ রকমই ফল হবে। তবে মেধা তালিকায় থাকলে ভাল লাগত। সে জন্য আফশোস তো থাকবেই।’’ আশিঘর এলাকায় নেতাজি বাজারে বাড়ি প্রীতমদের। মা লতাদেবী গৃহবধূ। বাবা চন্দন কুমার দাস শিলিগুড়ির নিমারুজোত প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। ছেলেকে পড়াশোনায় তিনি সাহায্য করতেন। প্রীতম বাংলা এবং ইংরেজিতে ৯২ নম্বর পেয়েছে। অঙ্ক এবং জীবনবিজ্ঞানে পেয়েছে ১০০ নম্বর। ভৌতবিজ্ঞান ও ভূগোলে ৯৯। ইতিহাসে ৯৭। লতাদেবী জানান, পরীক্ষা দিয়ে ছেলে তাঁদের জানিয়েছিল ৯৭ শতাংশ নম্বর আশা করছে। সেটাই হয়েছে। তবে রাজ্যের মেধা তালিকায় থাকলে তাঁরা সব চেয়ে খুশি হতেন।
রচয়িতা দাস। নিজস্ব চিত্র
একই রকম আফসোস অরবিন্দপল্লির বাসিন্দা রচয়িতা এবং তার পরিবার পরিচিতদের। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শেফালি সিংহ বলেন, ‘‘দুটো নম্বরের জন্য রচয়িতা মেধা তালিকায় থাকতে না-পারায় সত্যিই আমাদের সকলের আফশোস হচ্ছে। বাংলা, ইংরেজিতে দুই তিন নম্বর বেশি পেলেই হয়ে যেত।’’ রচয়িতা প্রাপ্ত নম্বরের মধ্যে অঙ্ক, জীবন বিজ্ঞান এবং ভূগোলে ১০০ করে পেয়েছে। ভৌতবিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৫। বাংলাতে ৯৪ এবং ইংরেজিতে ৯২। তাঁর কথায়, ‘‘ইংরেজি এবং বাংলায় আর একটু বেশি নম্বর আশা করেছিলাম। খাতা পুনর্মূল্যায়নের কথা ভাবছি।’’ বাবা চন্দন দাস ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করেন। মা সুস্মিতা বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থায় কাজ মানেই অনিশ্চয়তা। টেনশনে থাকতে হয়। মেয়েকে তাই আমরা অনেক সময় প্রয়োজনীয় বই কিনে দিতে পারিনি। সমস্যার মধ্য দিয়েই চলতে হয়েছে।’’ রচয়িতা ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আগ্রহী। প্রীতমের লক্ষ ডাক্তারি পড়া। মাধ্যমিকে দুই জনেরই সমস্ত বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল এবং বিভিন্ন বিষয় একই গৃহশিক্ষকের কাছে তারা পড়েছে।