প্রতীকী চিত্র
অভাবের সংসার। প্রতিদিন কাজে বেরলে তবে হাঁড়ি চড়ে ঘরে। কিছু সমস্যায় ছেলেকে স্কুলের জুতো কিনে দিতে পারেননি তাঁরা। জুতো না পরে স্কুলে যাওয়ায় ওই ছাত্রকে পরপর দু’দিন স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। জলপাইগুড়ি ফণীন্দ্রদেব বিদ্যালয়ের ঘটনা।
সপ্তম শ্রেণিতে পরে ওই ছাত্র দেবাংশু স্যান্যাল। স্কুলের নিয়ম মেনে জুতো পরে না আসায় মঙ্গলবার ও বুধবার প্রধান শিক্ষক তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। যদিও প্রধান শিক্ষক প্রকাশ কুণ্ডু ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।দেবাংশুর বাবা পেশায় টোটো চালক। ছাত্রে মা লীলা স্যান্যাল বলেন, ‘‘আমার স্বামী অন্যের টোটো চালান। দিনের শেষে মাত্র ১৫০ টাকা পান। আমরা দেনায় জর্জরিত। সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ছেলেকে স্কুলের জুতো কিনে দিতে পারিনি। প্রধান শিক্ষক মঙ্গলবার ছেলেকে স্কুল থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। বুধবারও স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন।’’ প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করেন লীলাদেবী। বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে আমাদের আর্থিক অবস্থার কথা জানিয়েছি। উনি আশ্বাসদিয়েছেন ছেলের জুতোর ব্যবস্থা করবেন।’’
শহরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে নব্যেন্দু মৌলিক এই ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। শিক্ষার অধিকার আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই ধরনের ঘটনায় বিদ্যালয়ছুট পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ছে।’’ নব্যেন্দু ফণীন্দ্রদেব বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রও।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রকাশ কুন্ডু বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা মেনে সব ছাত্রকে বিদ্যালয়ের পোষাক ও জুতো পরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত এক মাস ধরে এই বিষয়ে ছাত্রদের সতর্ক করা হয়েছে। সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রকেও সতর্ক করা হয়। কিন্তু ওর পারিবারিক আর্থিক অবস্থার কথা জানা ছিল না। আমরা অবশ্যই ওই ছাত্রের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’’
বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি খবর নেব। স্কুলের নিয়মানুবর্তীতার স্বার্থে জুতো পরা যেমন দরকার, তেমনই এই ভাবে কোনও ছাত্রকে স্কুল থেকে বার করে দেওয়াও অনুচিত।’’