পথে: বিক্ষোভ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র
বহিরাগতদের হাতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিগ্রহের ঘটনার রেশ এখনও কাটেনি। এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠল শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তাই নিয়ে নতুন করে আন্দোলনের নামলেন পড়ুয়ারা।
মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা দলমত নির্বিশেষে মিছিল করে প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। গত কয়েক দিন ধরেই কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের পড়ুয়াদের একাংশ আন্দোলনে নেমেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কম্পিউটার বিভাগের শিক্ষক দিলীপ রায়চৌধুরী পরীক্ষায় ভাল নম্বর দেওয়ার টোপ দিয়ে ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেন ও নানা ভাবে হেনস্থা করেন। তা নিয়ে গত নভেম্বর মাসে উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়ার পরেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি কেন, সেই প্রশ্নেই বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা।
অবস্থা সামাল দিতে এ দিন ডেপুটি রেজিস্ট্রার পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেন। দু’দিন সময় নিয়ে তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন জানালেও সেই আশ্বাসে সন্তুষ্ট হতে পারেননি পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, কয়েক মাস আগে থেকেই তাঁরা বিষয়টি নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি তুলেছেন। কিন্তু আশ্বাস সত্ত্বেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এত দিনে।
এই পরিস্থিতিতে ডেপুটি রেজিস্ট্রার আন্দোলনকারীদের সামাল দিতে শেষ অবধি জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত চুক্তিতে নিযুক্ত ওই শিক্ষককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে যেতে বলা হয়েছে।
আজ, বৃহস্পতিবার উপাচার্য নিজেই বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করবেন। রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকার বলেন, ‘‘উপাচার্যকে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা না জানানো পর্যন্ত ওই শিক্ষক ছুটিতে থাকবেন।’’ অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এসএমএস করলেও তার উত্তর দেননি।
কলেজের ছাত্রদের পক্ষে শেখ আতোয়ার আলি, মইনুল সাহানরা বলেন, ‘‘আমরা অরাজনৈতিক ভাবে প্রতিবাদ করছি। গত ১৮ নভেম্বর ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি কেন, সেটাই আমাদের প্রশ্ন।’’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ছাত্রদের তরফে জানানো হয়, নভেম্বরের পরে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসেও তাঁরা লিখিত ভাবে নিজেদের উদ্বেগের কথা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। অথচ তা-ও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামতে হয়েছে।