এই সেদিনও সে স্কুলে পড়ত। তবে আর স্কুলে কোনও দিনও ফিরতে চায় না বিপ্লব বিশ্বাস।
জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাংলাদেশ সীমান্ত ছোঁয়া বেরুবাড়ি গমিরাপাড়া হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র বিপ্লব এখন পেশায় পরোদস্তুর টোটো চালক। বাবার অসুস্থতার কারণে সংসার চালাতে স্কুলের পাট চুকিয়ে তাকে টোটো চালাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে সে।
বিপ্লবের বাবা সুবল বিশ্বাস পেশায় দিনমজুরের কাজ করতেন। গতবছর থেকে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ওর দুই দাদা কেরলে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছেন কয়েক বছর আগেই। বিপ্লব বলে, ‘‘বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাধ্য হয়েছি পড়াশোনা ছেড়ে টোটো চালাতে।’’
প্রতিদিন সকালে বেরুবাড়ি থেকে টোটো নিয়ে জলপাইগুড়ি শহরে চলে আসে বিপ্লব। দিনভর শহরে টোটো চালিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে যায়। বিপ্লব বলে, ‘‘টোটো চালিয়ে এখন আর তেমন আয় হচ্ছে না। ভাবছি কিছুদিন পর কেরলে চলে যাব।’’
গমিরাপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক নৃন্ময় রায় বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে স্কুলের একাংশের পড়ুয়ারা স্কুলছুট হয়ে পড়েছে। স্কুলছুট ছাত্রদের ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চলছে।’’ শিক্ষানুরাগীদের মতে, করোনা আবহে স্কুল বন্ধ থাকায় এক বড় অংশের পড়ুয়ারা স্কুলছুট হয়েছে। এই বিষয়ে সমীক্ষা চালানো হলে কত সংখ্যক ছেলেমেয়ে স্কুলছুট হয়েছে সেই পরিসংখ্যান মিলতে পারে। স্কুলছুটদের চিহ্নিত করে স্কুলের আঙিনায় ফেরাতে উদ্যোগী হতে হবে সকলকেই।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বালিকা গোলে বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতিতে জেলায় কত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী স্কুলছুট হয়েছে সেই বিষয়ে এখনও কোনও সমীক্ষা চালানো হয়নি। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের স্কুলমুখী করতে উৎসাহিত করছেন।’’