কাজের মাঝে। নিজস্ব চিত্র।
অফিসের দেওয়ালে ছাপা অক্ষরে সাঁটা মায়ের পরামর্শ— ‘শান্ত হও সোনা, সংযত হও’। তবে তেমন কোনও লক্ষণ তাঁর মধ্যে দেখা গেল না। কাজে গিয়ে কখনও হাতজোড় করছেন। কখনও মশকরা। কখনও চিৎকার। তিনি যে সরকারি আমলা, ত্রিদিব সর তা বুঝতেই দিচ্ছেন না কাউকে। মিশে যাচ্ছেন সবার সঙ্গে। তাঁর কথায়, “খুব ছোট ছিলাম, যখন বাবা মারা গিয়েছেন। বাবা নকশাল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছিলেন। মা অনেক কষ্ট করে বড় করেছেন। মানুষের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করছি।”
গ্রামোন্নয়ন দফতরের কোচবিহারের সহকারী প্রকল্প আধিকারিকের দায়িত্বে রয়েছেন ত্রিদিব। বাড়ি কলকাতার ভবানীপুরে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের কাজ নিয়েই তাঁর দিনরাত কেটে যায়। ফাঁকে কোভিডবিধি নিয়ে প্রচার। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর জেলা জুড়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের ঋণদান মেলার আয়োজন করেছে গ্রামোন্নয়ন দফতর। কোচবিহারে ৫০ হাজার ২৭৮টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় পাঁচ লক্ষ মহিলা যুক্ত। কেউ মেখলা শাড়ি তৈরি করেন, কেউ পাঁপড়, কেউ কাপড়ের ব্যবসা।
গত কয়েক দিন গ্রামে গ্রামে গিয়ে গোষ্ঠীর মহিলাদের ত্রিদিব জানাচ্ছেন, ঋণ নিয়ে ব্যবসা করলে সব সাহায্য মিলবে। চিৎকার করে বলছেন, “আমি নিজে পুরুষ মানুষ হয়ে বলছি, এই টাকা পুরুষ মানুষের হাতে দেবেন না। এটা আপনাদের টাকা।” কেউ জোর করে টাকা নিতে চাইলে প্রশাসনকে জানাতে বলছেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কো-অর্ডিনেটর সায়রা বানু ও মধুমিতা দাস বলেন, “উনি খুব সহজে মিশে যান।” স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক সদস্যার কথায়, “এত সরল ভাবে আমাদের আপন করে নেবেন, ভাবতে পারিনি।”