প্রতীকী ছবি।
নতুন কমিটি নিয়ে আলিপুরদুয়ারে দলের গোষ্ঠী কোন্দল রুখতে ফের একবার কড়া বার্তা দিলেন তৃণমূলের রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্ব। আর তারপরই বিবদমান দুই গোষ্ঠীর নেতাদের গলায় ফুটে উঠল ‘ঐক্যের সুর’। যে ঘটনায় খানিকটা হলেও স্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু এই ‘ঐক্য’ আদৌ দীর্ঘস্থায়ী হবে কিনা তা নিয়ে দলের দলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংশয় অবশ্য জারিই থাকল।
গত সপ্তাহে তৃণমূলের পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি গঠন নিয়ে কোন্দলের জেরে দিন তিনেক আগেই শিলিগুড়িতে দলের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) সামনে বাদানুবাদে জরিয়ে পড়েন দলের দুই শিবিরের নেতারা। এরপরই দুই শিবিরের নেতাদের দায়িত্ব ভাগ করে ঐক্যবদ্ধ থাকার কড়া বার্তা দেন অভিষেক ও পিকে। আর এবার আলিপুরদুয়ারে দলের এই কোন্দল থামাতে একই বার্তা দিলেন জেলার প্রাক্তন পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক।
বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার জেলা পার্টি অফিসে দল-বদলের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে মলয় বিবদমান নেতাদের উদ্দেশ্যে সাফ জানিয়ে দেন, “শীর্ষ নেতৃত্ব যেটা ঠিক করে দেবে, সেটা দলের সকলকে মানতে হবে। কারণ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব সংগঠনের যাতে ভাল হয়, সেকথা চিন্তা করেই যাবতীয় পদক্ষেপ নেয়।” আর মলয়ের এই কড়া বার্তার পরই ঐক্যের সুর দেখা গেল বিবাদমান দুই শিবিরের নেতাদের কারও কারও মধ্যে।
নতুন কমিটি নিয়ে গোষ্ঠী কোন্দলের মাঝেই তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি মোহন শর্মা। ঋতব্রতকে পরিযায়ী নেতা বলে কটাক্ষও করেন তিনি। এদিন আলিপুরদুয়ার জেলা পার্টি অফিসে দলবদলের কর্মসূচির পর কালচিনিতে চা বাগানের একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যান মন্ত্রী মলয়। সেখানে মোহন ও ঋতব্রতও উপস্থিত ছিলেন। সেই অনুষ্ঠান শেষে মোহন বলেন, “এক পরিবারে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝগড়া হতেই পারে। এটা কোনও সমস্যা নয়। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা সবাই এক আছি।” ঋতব্রতও বলেন, “একটা ঘরে ঘটি-বাটির মধ্যেও ঠোকাঠুকি হয়। কিন্তু সংবাদ মাধ্যম তিলকে তাল করে দেখানোর চেষ্টা করছে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা একজোট আছি।”
তারপরও অবশ্য গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে তৃণমূলের নিচুতলার নেতা-কর্মীদের একাংশের মধ্যে সংশয় কাটছেনা। এদিন মন্ত্রী মলয় দলের শহর ব্লক কার্যালয় উদ্বোধন করলেও সেখানে বা দলবদল কর্মসূচিতে দেখা যায়নি আলিপুরদুয়ার পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আশিস দত্তকে। শহর ব্লক সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় জানান, এদিনের কর্মসূচিতে সকলকে আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল। তবে আশিসের কথায়, এদিন দলের কোনও কর্মসূচির কথা তাঁর জানাই ছিলনা।
এদিন কালচিনি ও রায়মাটাং চা বাগান শ্রমিকদের সরকারি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন মলয় ঘটক। সেখানে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কড়া সমালোচনা করেন তিনি।