—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিমানবন্দরের রানওয়েতে হাটছে ‘মুলা দাঁত’ (মুলোর মতো দাঁত)। তার পিছনে ছুটছে নীলবাতি লাগানো গাড়ি। কোনও যাত্রী নয়। ‘মুলা দাঁত’ হল বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলের একটি দাঁতাল হাতি। রবিবার রাতে উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা বিমানবন্দরের রানওয়েতে হাতিটি ঢুকে পড়েছিল। সেখান থেকে তাকে সরাতে বহু চেষ্টা করতে হয়েছে বনকর্মীদের।
বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাধারণত রাতের দিকে কোনও বিমান ওঠানামা করে না। ফলে, বিমান চলাচলে কোনও ব্যাঘাত ঘটেনি বলে সেখানকার আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। তবে বায়ুসেনার তরফে রাতে মহড়া হয়ে থাকে। রবিবার রাতে বায়ুসেনারও কোনও বিমান ওঠানামা করেনি বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর। দিনের বেলা হলে তা কতটা বিপদের হত তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বিভিন্ন স্তরে।
বন দফতরের কার্শিয়াং ডিভিশনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘খাবারের সন্ধানে হাতির লোকালয়ে চলে আসার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। বিমানবন্দরেও ঢুকেছে। তবে সেখান থেকে রাতেই তাকে জঙ্গলে পাঠাতে সক্ষম হয়েছেন বনকর্মীরা। কোনও ক্ষতি হয়নি।’’ বন দফতর সূত্রের খবর, ‘মুলা দাঁত’ গত শুক্রবার সকাল নাগাদ বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল থেকে উত্তরকন্যা হয়ে বাগডোগরার ফয়রানিজোত, মহম্মদ বক্স এবং আরও কয়েকটি এলাকায় ঘুরেছে। সেখান থেকে তারবান্দা হয়ে, বাগডোগরা বিমানবন্দরের ভিতরে ঢুকে পড়ে। ছুটতে থাকে রানওয়েতে। রাতে সে রানওয়ের ভিতরে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ছিল বলে দাবি। হাতিটিকে বিমানবন্দর থেকে বার করে বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলে পাঠানো হয়েছে বলে বন দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।
বিমানবন্দরে দাঁতাল ঢুকে পড়া নিয়ে বিজেপি এবং তৃণমূল নেতাদের মধ্যে টিপ্পনী, পাল্টা কটাক্ষ চলছে। মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ বলেন, ‘‘তৃণমূলের মদতেই জঙ্গল ধ্বংস করে কাঠ পাচার হচ্ছে। বনের বাস্তুতন্ত্র নষ্ট হয়েছে। দিল্লিতে গিয়ে সে অভিযোগই হয়তো জানাতে চাইছে হাতিটি।’’ পাল্টা, তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা (সমতল) সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ বলেন, ‘‘হাতিটি হয়তো দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রতিবাদে সরব হতে চাইছে। কারণ, কেন্দ্র রাজ্যের জঙ্গলকে ব্যবহার করলেও তার রক্ষণাবেক্ষণ করে না।’’ বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা মহম্মদ আরিফ ফোন ধরেননি। জবাব মেলেনি মেসেজের।