উদয়ন গুহ। ফাইল চিত্র
মাঝেমধ্যেই শিরোনামে তিনি। কখনও খোদ তাঁর বিরুদ্ধেই উঠছে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। কখনও অনুগামীদের বিরুদ্ধে। জাতীয় মানবধিকার কমিশনের ‘কুখ্যাত অপরাধী’-র তালিকাতেও দেখা গিয়েছে তাঁর নাম।
তিনি উদয়ন গুহ। তৃণমূলের দিনহাটার প্রাক্তন বিধায়ক। বর্তমান দল কোচবিহার তৃণমূলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কেন বারে বারে ‘হুমকি’-র আশ্রয় নিতে হচ্ছে উদয়ন গুহকে? দিনহাটায় তাঁর রাশ কি আলগা হয়ে পড়ছে? উদয়ন বলেন, “আমি তো অল্প ভোটে হলেও হেরেছি। তা হলে এই কথার আর গুরুত্ব কী? আর বিজেপি কি তা হলে ভয় দেখিয়ে রাশ হাতে নিয়েছিল?”
বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, শুধু ভোটে হার নয়, তাঁর উপরে হামলার ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে যান উদয়ন। কমল গুহের পুত্র উদয়নের উপরে হামলা হতে পারে, তা প্রায় কেউই কখনও ধারণা করতে পারেননি। এমনকী, সম্ভবত, উদয়ন গুহ নিজেও। এক-দু’বার হামলার মুখে যে তিনি পড়েননি, এমনটা নয়। কিন্তু শারীরিক ভাবে এমন হেনস্থা উদয়ন ভোটের ফল প্রকাশের পরে প্রথম বার হয়েছেন।
উদয়ন এ বারে বিধানসভা ভোটে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিকের কাছে ৫৭ ভোটে হেরে যান। তার কিছু দিন পরেই বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে তাঁর উপর হামলার অভিযোগ ওঠে। উদয়নের হাত ভেঙে দেওয়া হয়। বেশ কিছু দিন তিনি কলকাতায় নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। পরে ভাঙা হাতের ছবি দিয়ে উদয়ন ফেসবুকে লিখেছিলেন, “যত দিন হাতের এই দাগ মিলিয়ে না যাচ্ছে, ততদিন জগদীপবাবুকে বার বার দিনহাটায় আসতে হবে বিজেপি কর্মীদের সান্ত্বনা দিতে।”
বাম আমলে দিনহাটা কমল গুহের গড় হিসেবেই পরিচিত ছিল। তাঁর মৃত্যুর পরে উদয়ন তা আগলে রাখেন। ২০১৬ সালের আগে অবশ্য তিনি ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। বিরোধীরা দাবি করেন, সেই সময়েও দিনহাটায় রাশ আলগা হয়ে পড়েছিল উদয়নের। এর পরেই তৃণমূলে যোগ দেন। উদয়ন অবশ্য সে সব ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। বিরোধীদের দাবি, এ বারেও একই ভাবে উদয়ন গুহের পাশ থেকে মানুষ সরে গিয়েছেন। সে জন্য ‘ভয়’ দেখিয়ে সবাইকে পাশে পেতে চাইছেন।
দিন দুয়েক আগেই উদয়নের ভাইপো জয় গুহের বিরুদ্ধে এক মহিলা সাংবাদিককে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ফেসবুকেই জয় লিখেছেন, ‘‘ভয়ঙ্কর খেলা হবে। ওয়েট করো হয়তো খবর করার সময়টুকুও পাবে না। গৌরী লস্করের (লঙ্কেশের) কথা মনে আছে তো?” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “মানুষ সরে যাওয়াতেই হুমকি দিয়ে ভয় তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।”