ক্ষমতা বদল হতে পারে দার্জিলিং পুরসভা। — ফাইল চিত্র।
দার্জিলিং পুরসভায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হামরো পার্টির রীতেশ পোর্টেল এবং আরও কয়েক জন। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, অনাস্থা প্রস্তাব আনায় কোনও বাধা নেই। এর পরেই, দার্জিলিং পুরসভা হামরো পার্টির হাতছাড়া হতে চলেছে বলে রাজনৈতিক জল্পনা ঘনীভূত হয়েছে। প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতা তথা জিটিএ চিফ এগ্জ়িকিউটিভ অনীত থাপা বলেন, ‘‘আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনাস্থার প্রস্তাবের সভা ডাকা হয়েছে। পুরসভায় এখন আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তা ওই সভাতেই স্পষ্ট হবে।’’
গত ২৪ নভেম্বর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা চেয়ে অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কাউন্সিলরেরা আবেদন করেন। কিন্তু সে বৈঠক নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ১৩ ডিসেম্বর ভাইস চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে অনাস্থার সভা ডাকারবিষয়টি জানানো হয়। অভিযোগ, তাতেও সাড়া মেলেনি। তার পরেই ২৮ ডিসেম্বর সভা ডাকার বিষয়টি স্থির করেন কাউন্সিলরেরা। অনাস্থা সভা আটকাতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চে যান হামরো পার্টির রীতেশ পোর্টেল এবং অন্য কয়েক জন। এ দিন বিচারপতিকৌশিক চন্দ জানিয়ে দেন, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা নেই। এ দিন হামরো পার্টির নেতা অজয় এডওয়ার্ড বলেন, ‘‘হলিডে বেঞ্চ রীতেশ পোর্টেলের আবেদন খারিজ করেছে। আমরা ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করব।’’ তাঁর বক্তব্য, অন্যায় ভাবে অনাস্থা ডাকার বিরুদ্ধেই তাঁরা আদালতে গিয়েছিলেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, দার্জিলিং পুরসভা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা এবং তৃণমূলের দখলে যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। মোট ৩২ আসনের দার্জিলিং পুরসভায় ১৮টি আসনে জিতে বোর্ড দখল করে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ন’টি এবং তৃণমূল দু’টি আসন পায়। বিমল গুরুংয়ের জনমুক্তি মোর্চা জেতে তিনটি আসনে। এর পরে জিটিএ ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার এক জন কাউন্সিলর ইস্তফা দেন। এর ফলে, কাউন্সিলর সংখ্যা ৩১ হয়। সম্প্রতি হামরো পার্টির ছ’জন কাউন্সিলর প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দেন। তাতে তাদের কাউন্সিলরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪। এরই মধ্যে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সঙ্গে মিলে তারা পুরবোর্ড গঠন করবে।
হামরো পার্টির কাউন্সিলর বর্তমানে ১২ জন। এই পরিস্থিতিতে জনমুক্তির মোর্চার তিন কাউন্সিলরের সমর্থন পেতে অজয় এডওয়ার্ড বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। সম্প্রতি দিল্লিতে পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে বিমল গুরুংয়ের কর্মশালায়যোগ দেন অজয়। সে সময় পুরসভা নিয়েও বিমলের সঙ্গে তাঁর কথা হয় বলে জানিয়েছিলেন অজয়।
সব মিলিয়ে জোর জল্পনা পাহাড়ে।