পথে হাঁটবেন বিনয় তামাং। — ফাইল চিত্র।
বিনয় তামাং এ বার কোন পথে হাঁটবেন? জিএনএলএফ, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং তৃণমূলের পরে তিনি কি নতুন কোনও দলে যাবেন, না বিমল গুরুং, অজয় এডওয়ার্ডের পাশে থেকে গোর্খা নেতা হিসাবে রাজনীতি করে যাবেন? দার্জিলিং পাহাড় জুড়ে এখন সেই চর্চা চলছে। কয়েক দিন আগে বিনয় গুরুং, অজয়দের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন বলে খবর৷ তবে এঁদের সঙ্গে, না শেষমেশ গেরুয়া শিবিরে পা বাড়াতে চলেছেন বিনয়, তা অবশ্য সময় বলবে। বিনয় অবশ্য বলছেন, ‘‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আর ক’টা দিন অপেক্ষা করুন। সব ঘোষণা করে দেব৷ এ বার যা করতে যাচ্ছি, তা পুরোটাই আমার জাতির জন্য।’’
ছাত্রাবস্থা থেকে বিনয় রাজনীতির ময়দানে। প্রথমে সুবাস ঘিসিংয়ের দলের নাম লিখিয়ে কাজ করতে থাকেন। নব্বইয়ের দশক শেষে, রাজনীতি থেকে আবার নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হয়ে কাজ করছিলেন। কিন্তু রাজনীতির ময়দানে সরাসরি না হলেও বিভিন্ন স্তরে তিনি যোগাযোগ রেখে চলতেন। ২০০৭ সালে প্রশান্ত তামাংকে গানের একটি রিয়ালিটি শো জেতানো নিয়ে পাহাড়ে একটি সংগঠন তৈরি হয়। বিনয় সেটিতে ছিলেন। এর পরে, গুরুংয়ের সঙ্গে নিয়মিত ওঠাবসা শুরু হয়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসাবে বিনয় দলের সহকারী সাধারণ সম্পাদক হন।
২০১৭ অবধি সব ঠিকই ছিল। কিন্তু গুরুংয়ের সঙ্গে বিনয়ের দূরত্ব কিছুটা বেড়েছিল। গুরুং পাহাড়ে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর দার্জিলিং ছাড়তেই, মোর্চার অন্দরে একটি গোষ্ঠী তৈরি করে বিনয় সেটির সভাপতি হন। অনীত থাপা হন সাধারণ সম্পাদক। জিটিএ চেয়ারম্যানও হন। বিধানসভা ভোটে লড়াইও করেন। ২০২১ সালে বিধানসভা পরে দলে কার্যত একা হয়ে পড়েন বিনয়। একাই তিনি নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে দল চালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। দল ছেড়ে কিছু দিন ঘরে বসে ছিলেন। ফের তৃণমূলে যান। জিটিএ সদস্য হয়ে কাজ শুরু করেন। তবে অনীতের সঙ্গে ‘সমস্যা’ তাঁকে গুরুং, অজয়ের পাশে নিয়ে যায় বলে জানা যায়। শেষে অনীতের সহযোগী হয়ে তৃণমূলের দার্জিলিং পুরবোর্ড দখলের প্রতিবাদ করে দল ছাড়েন।
পাহাড়ের রাজনীতির নিয়মিত পর্যবেক্ষকদের একাংশের ধারণা, এ বার বিনয়ের বড় দলে ঢুকতে সমস্যা হতে পারে। কারণ, প্রতি দলে কিছুদিন থাকার পরে, নানা সমস্যার জেরে দল ছাড়া, দলের সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে বিনয়কে। তাই তাঁকে দলে নেওয়ার আগে অন্য দলের নেতাদের বিষয়টি মাথায় থাকতেই পারে। আর গুরুংয়ের দলে বিনয়ের ঢোকাটা সোজা হলে এত দিনে হয়ে যেত। কারণ, ২০১৭ সালে গুরুং-সহ বাকিদের সমালোচনা করে দল ভেঙে বিনয়ই রাজ্যের সঙ্গে হাত মেলান। গুরুং মানলেও, দলের বাকিরা বিনয়ের প্রশ্নে কী অবস্থান নেবেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। যদিও এ বিষয়েবিনয়ের বক্তব্য, ‘‘রাজনীতিতে শত্রু-মিত্র নিয়ে নানা কথা হয়। গোর্খা জাতির প্রতি যাঁরা দায়বদ্ধ তাঁদেরসঙ্গে থাকছি।’’