জলপাইগুড়ি পৌরসভা। —ফাইল চিত্র।
পুর-রাজনীতিতে জলপাইগুড়িতে নতুন জল্পনা উস্কে দিয়েছে ‘গ্রুপ ৯’। গত শুক্রবার জলপাইগুড়ি পুরসভার সভাঘরে পুরপ্রতিনিধি, পুর আধিকারিকদের উপস্থিতিতে তৃণমূলের ন’জন পুরপ্রতিনিধির সই করা চিঠি জেলাশাসককে দেওয়া হয়। সে চিঠিতে পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে ছাব্বিশ দফা অভিযোগ ও ক্ষোভ জানানো হয়েছিল। তৃণমূলের পুরপ্রধান এবং উপ পুরপ্রধানের উপস্থিতিতে তাঁদেরই বিরুদ্ধে পুর-বোর্ড নিয়ে অভিযোগ জানিয়ে দলেরই পুরপ্রতিনিধিদের ওই চিঠিকে দলের একাংশ কার্যত ‘বিদ্রোহ’ হিসেবেই দেখছেন। যে ন’জন পুরপ্রতিনিধি চিঠিতে সই করেছেন তাঁদের মধ্যে কয়েকজন উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। সে কারণেই পুরসভার অন্দরে গুঞ্জন উঠেছে, উপ পুরপ্রধান কি দলের অন্দরে ‘সঙ্গী’ হারাচ্ছেন? কারণ, চিঠিতে যে দফতরগুলি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে, তার বেশিরভাগই সৈকতের হাতে। তৃণমূলের একাংশের প্রশ্ন, শুক্রবারের পরে পুরসভায় তৃণমূলের কি নতুন গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে!
বছর দুয়েক আগে, পুরসভায় বিপুল জয় পেয়ে তৃণমূল বোর্ড গঠনের পর থেকেই পুরপ্রধান পাপিয়া পাল এবং উপ পুরপ্রধান সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের ‘দূরত্ব’ বার বার প্রকাশ্যে এসেছে। তৃণমূলের অন্দরে চর্চা ছিল, পুরপ্রধান এবং উপ পুরপ্রধানের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে উপ পুরপ্রধানের গোষ্ঠীই শক্তিশালী। গত শুক্রবার জলপাইগুড়ি শহর ব্লক তৃণমূল সভাপতি তথা পুর প্রতিনিধি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ন’জন পুরপ্রতিনিধি বোর্ডের বিরুদ্ধে চিঠি দেন। চিঠিতে তপন ছাড়াও, উত্তম বসু, তিয়াসা সিংহ, সুব্রত পাল, পৌষালী দাস সরকার, তারকনাথ দাস, দীনেশ রাউত, মণীন্দ্রনাথ বর্মণ এবং পিঙ্কু বিশ্বাসের সই রয়েছে। ন’জনের মধ্যে ‘সৈকত-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত অন্তত পাঁচ জন। তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৈকতের ‘মধুর’ সম্পর্ক তৃণমূল এবং তৃণমূলের বাইরেও অজানা নয়। সে কারণেই এই নতুন গোষ্ঠী কি পুরসভার তৃণমূলের রাজনৈতিক ভারসাম্যে বদল আনতে চলেছে, উঠেছে প্রশ্ন।
যদিও সৈকতের দাবি, “শুধু আমার দফতর কেন, সব দফতর নিয়েই অভিযোগ রয়েছে। আমার হাতে যে দফতর রয়েছে সেগুলির কাজের ব্যাখ্যা আমি দিয়েছি, তাতে সকলে সন্তুষ্টও।” শহর ব্লক সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে সমস্যাগুলি জানিয়েছি, সেগুলি এ বার বোর্ডের বৈঠকে তুলে ধরব।”