ফাইল চিত্র।
সিপিএম থেকে তৃণমূলে, সেখান থেকে এ বার বিজেপি। শুভেন্দু অধিকারীরই হাত ধরে চার বছরে দু’বার দলবদল করলেন মালদহের গাজলের বিধায়ক দীপালি বিশ্বাস। শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বিজেপিতে যোগ দেন দীপালি ও তাঁর স্বামী রঞ্জিত।
দীপালি যোগ দিতেই গাজলে বাজি ফাটিয়ে, মিষ্টিমুখ করে উৎসবে মাতেন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি প্রসূন রায় বলেন, “তৃণমূলে থেকে বিধায়ক গাজলের নয়, নিজেদের উন্নয়ন করেছেন। যার জবাব মানুষের কাছে দিতে পারবেন না বলে দলবদল করলেন বিধায়ক।’’
অন্য দিকে, দীপালি তৃণমূলে যোগ দিতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে গাজলের বিজেপি নেতা, কর্মী থেকে সমর্থকদের কপালে। তাঁদের দাবি, সিপিএমের টিকিটে লড়াই করে গাজলের তৃণমূল প্রার্থী সুশীল রায়কে হারিয়েছিলেন দীপালি। সেই সুশীল এখন বিজেপিতে। এ ছাড়া ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেই টিকিটের দাবিদার ছিলেন বিজেপির জেলা পরিষদের সদস্য সাগরিকা সরকার। এ বারও টিকিটের দাবিদার রয়েছেন তিনি। এমন অবস্থায় দীপালি দলে যোগ দেওয়ার তাঁরও টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আশঙ্কায় ভুগছে গাজলের বিজেপি শিবির। বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “টিকিটের বিষয়ে ঠিক করবে কেন্দ্র। তাই ও সব নিয়ে আমরা কেউ ভাবছি না।”
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সমর্থনে সিপিএমের টিকিটে গাজলে জয়ী হয়েছিলেন দীপালি। ওই বছরই শুভেন্দুর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন দীপালি ও রঞ্জিত। সেই শুভেন্দুরই হাত ধরে ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে এ বারে বিজেপিতে যোগ দেন তাঁরা। দীপালি বলেন, “রাজ্য সরকারের তরফে মহিলা কলেজ, পুরসভা, দমকল কেন্দ্রের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। চার বছরে এখনও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। গাজলের মানুষ হতাশ হয়েছেন। তাই মানুষের স্বার্থে বিজেপিতে যোগ দিতে হয়েছে।” রঞ্জিত বলেন, “তৃণমূলে যোগ্য সম্মানটুকুও মিলছিল না।”
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে গাজল বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের থেকে প্রায় ৪২ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। গাজল সিপিএমেরও গড় হিসেবে পরিচিত। ফলে নিজের আসন ধরে রাখতেই দীপালির ফের দলবদল বলে দাবি বিরোধী শিবিরের। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসম নুর বলেন, “স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই দলের জেলাস্তরের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। অস্তিত্ব বাঁচাতে তাঁরা দলবদল করেছেন। তাতে দলের ক্ষতি হবে না।”