প্রতীকী ছবি।
করোনায় টিকা নেওয়ার তালিকায় এক নম্বরে বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীর নাম থাকায় শুরুতেই বিতর্ক দানা বেঁধেছিল আলিপুরদুয়ারে। তবে শেষ পর্যন্ত শনিবার অবশ্য টিকা নিলেন না বিধায়ক। তার পরেও বিতর্ক কমল না আলিপুরদুয়ারে। অন্য দিকে কামাখ্যাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মঞ্জিলা লামা প্রতিষেধক নেওয়ায় প্রশ্ন তুললেন বিরোধীরা। এএনএম-দের একাংশ প্রতিষেধক না নেওয়ায় কামাখ্যাগুড়িতে এ দিন প্রতিষেধক নিতে হাজিরাও কম ছিল।
এ দিন আলিপুরদুয়ারে জেলা হাসপাতালের পাশাপাশি ফালাকাটা, যশোডাঙা ও কামাখ্যাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে করোনার প্রতিষেধক দেওয়া হয়। প্রতিষেধক নেওয়ার পরে প্রত্যেককে আধঘণ্টা পর্যবেক্ষণেও রাখা হয়। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে সাফাইকর্মী চন্দন বাসফোর প্রথম প্রতিষেধক নেন। চন্দনের কথায়, ‘‘“প্রতিষেধক নেওয়ার সময় বা নেওয়ার পরে আমার কোনও সমস্যা হয়নি। প্রতিষেধক নিয়ে মনে কোনও ভয়ও ছিল না। প্রতিষেধক নিতে সবার এগিয়ে আসা উচিত।’’
এ দিন প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পৌঁছান রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী। প্রতিষেধক নেওয়ার তালিকায় প্রথমেই সৌরভের নাম থাকা নিয়ে শুক্রবারই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছিলেন। এ দিন সৌরভ বলেন, ‘‘রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হিসেবেই হয়তো আমার নাম তালিকায় রাখা হয়েছিল। আমার সঙ্গে এক স্বাস্থ্যকর্তা যোগাযোগও করেছিলেন। কিন্তু আমি তাঁকে জানিয়েছি, আগে জনগনকে প্রতিষেধক দেওয়া হোক। তাই আমি প্রতিষেধক নিইনি।’’ কিন্তু স্বাস্থ্যকর্মী না হওয়া সত্বেও কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মঞ্জিলা লামা কেন এ দিন কামাখ্যাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে গিয়ে প্রতিষেধক নিলেন তা নিয়ে সরব বিজেপি।
বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার অভিযোগ, ‘‘প্রতিষেধক নিয়েও তৃণমূলের নেতারা যা খুশি তাই করতে শুরু করেছেন।’’ মঞ্জিলা লামা অবশ্য পাল্টা বলেন,, ‘‘আমি ব্লক স্বাস্থ্য কমিটির সভাপতি। সরকারি কোনও সুবিধা পেতে এই প্রতিষেধক নিইনি। সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করতেই প্রতিষেধক নিই। কিন্তু তা নিয়ে যে ভাবে রাজনীতি করা হচ্ছে, তাতে আমি হতাশ।’’ আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘ব্লক স্বাস্থ্য কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রতিষেধক নিতেই পারেন। এতে বিতর্কের কিছু নেই।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এ দিন আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা, সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরা ও হাসপাতাল সুপার চিন্ময় বর্মণ টিকা নেন। কামাখ্যাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রথম প্রতিষেধক নেন স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির ওসি নয়ন দাস। এ দিন বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত জেলা হাসপাতাল এবং ফালাকাটা ও যশোডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে একশো জন করে প্রতিষেধক নেন। এএনএমদের একাংশ প্রতিষেধক না নেওয়ায় কামাখ্যাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ৬৫ জন প্রতিষেধক নেন।