শোকার্ত: নিহত নধিরামের বাড়িতে শোকগ্রস্ত পরিবার। রয়েছেন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। নিজস্ব চিত্র।
সংগঠন দুর্বল করতেই তাদের দলের কর্মীকে বিজেপি খুন করেছে বলে অভিযোগ তুলল তৃণমূল। কোচবিহারের দক্ষিণ মরিচবাড়িতে খুন হওয়া এক দলীয় কর্মীর বাড়িতে শুক্রবার সকালে, যান তৃণমূলের রাজ্যের সহ সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। রবীন্দ্রনাথ অভিযোগ করেন, ওই এলাকায় সংগঠন দুর্বল করতেই বিজেপি ছক কষে ওই কর্মীকে খুন করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাজারে দুধ বিক্রি করে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন নধিরাম মণ্ডল (৬৩)। ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তাঁর মুখ ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয়রা মৃতদেহ রাস্তার পাশে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। ওই ঘটনায় পুলিশ গ্রামেরই এক বাসিন্দা কমলেশ্বর রায়কে গ্রেফতার করেছে। নধিরাম এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লাল্টু হালদার বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত চলছে। কী কারণে খুন হয়েছে তা দ্রুত জানা যাবে।’’
বিজেপি অবশ্য ওই ঘটনার সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছে। তাদের পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করছে। বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, ‘‘মিথ্যে ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলছে তৃণমূল। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করলেই তা স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’
বিধানসভা ভোটের আগে কিছুদিন ধরেই তেতে উঠতে শুরু করেছে কোচবিহার। কিছুদিন আগেই তুফানগঞ্জের রামপুরের এক তৃণমূল কর্মী খুনের অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে তোলপাড়া হয়েছিল জেলা। জেলায় আগে বিজেপি কর্মী খুনের অভিযোগও ওঠে। এরই মধ্যে নতুন করে আরও একটি খুনের ঘটনা সামনে আসায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, প্রত্যেকটি ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে।
মরিচবারি কোচবিহার উত্তর বিধানসভার অন্তর্গত গ্রাম। রবীন্দ্রনাথ দাবি করেন, নধিরাম দীর্ঘসময় ধরেই তৃণমূল করেন। এলাকায় তাঁর যথেষ্ট প্রভাব ছিল। মানুষের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল। যা মেনে নিতে পারেনি বিজেপি। ওই বিধানসভা এলাকা বর্তমানে বামেদের দখলে রয়েছে। গত লোকসভার নিরিখে সেখানে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। ওই এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলও রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা অবশ্য দাবি করেন, নধিরামের সঙ্গে কারও কোনও বড় বিরোধ ছিল না। তদন্তকারী পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বেশ কিছু তথ্য আমরা হাতে পেয়েছি। একজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। ঠিক সময়ে সব প্রকাশ্যে আনা হবে।’’