Special Task Force

Balurghat: ‘সেফ হাউজ়’ গ্রামে কেন, নানা ধারণা গোয়েন্দাদের

গোয়েন্দাদের দাবি, আউশায় বাংলাদেশের একটি জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য মুফাক্কির আউশায় সামিদ আলি মিয়া ছদ্মনামে প্রায় এক বছর আত্মগোপন করে ছিল।

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০২২ ০৮:২৪
Share:

আউশায় রাকিবের বাড়ি। ছবি: অমিত মোহান্ত

দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তিন দিক বাংলাদেশ ঘেরা। কিন্তু তারও মধ্যে নিজের গ্রাম, গঙ্গারামপুরের আউশাতেই কেন জঙ্গিদের লুকিয়ে রাখার ‘সেফ হাউজ়’ তৈরি করল আব্দুর রাকিব ওরফে হাবিবুল্লা? উত্তর ২৪ পরগনার শাসন থেকে দু’দিন আগে তাকে ধরার পরে, এ প্রশ্ন ভাবাচ্ছে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) গোয়েন্দাদের। তাঁদের অনুমান, আউশা গ্রামের ভৌগোলিক তথা কৌশলগত অবস্থান এবং গ্রামে হাবিবুল্লার ‘সজ্জন’ ভাবমূর্তিই আউশাকে ব্যবহার করার কারণ।

Advertisement

গোয়েন্দাদের দাবি, আউশায় বাংলাদেশের একটি জঙ্গি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য মুফাক্কির আউশায় সামিদ আলি মিয়া ছদ্মনামে প্রায় এক বছর আত্মগোপন করে ছিল। সে হিসাবে কার্যত ‘সেফ হাউজ়’ বলা যায় আউশাকে। ভৌগোলিক অবস্থান বিশ্লেষণ করে গোয়েন্দারা দেখেছেন, আউশা থেকে বাংলাদেশ সীমান্তের এলেন্দারি, ফরিদপুর দোমোথা, রাধাকৃষ্ণপুর, মাধবপুরে গ্রামের রাস্তায় ৩০ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যায়। সেখান কয়েকটি জায়গায় কাঁটাতারের বেড়ার ‘ফাঁক’ জঙ্গিরা ব্যবহার করার কথা ভেবে থাকতে পারে। তা ছাড়া, আউশা থেকে বুনিয়াদপুর, কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ হয়ে শিলিগুড়ির দিকে এবং গাজল, মালদহ হয়ে কলকাতার দিকে বা গাজল হয়ে বিহারের দিকে চলে যাওয়ার সুবিধা রয়েছে। ফুলবাড়ি থেকে তপন, করদহ হয়ে মালদহে ওঠার জন্য আমতলিঘাট হয়ে বিকল্প রাস্তা রয়েছে।

এলাকায় ধর্মীয় নেতা হিসেবে রাকিবের জনপ্রিয়তা ভালই ছিল। তাই তার সঙ্গে কে আসছে, যাচ্ছে, তা নজর করলেও তা নিয়ে সে ভাবে কারও মনে কোনও প্রশ্ন জাগেনি বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা। রাকিবের পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও, ওই গ্রামেরা বাসিন্দাদের কয়েক জন জানিয়েছেন, শু‌ধু আউশা নয়, ‘ভাল মানুষ’ হিসাবে আশেপাশের কয়েকটি গ্রামেই রাকিবের সুপরিচিতি রয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, সে সব কাজে লাগিয়েই গ্রামেই ‘সেফ হাউজ়’ তৈরি করা হয়।

Advertisement

এসটিএফ সূত্রের দাবি, রাকিবের চেষ্টায় গ্রামেই একটি মাদ্রাসা গড়ে ওঠে। বাংলাদেশ থেকে মুফাক্কির এসে আউশার সে মাদ্রাসাতেই ছদ্মনামে আশ্রয় নেয়। কয়েক মাস আগে, ভোপালে মুফাক্কির ধরা পড়লে, তাকে জেরার পরে এসটিএফের নজরে আসে রাকিব। পাসপোর্ট জাল করে মুফাক্কিরকে আনা হয়েছিল কি না, কারা ‘সেফ হাউজ়ে’ উঠেছিল, কী ভাবে তাদের যাতায়াত চলত, খতিয়ে দেখছেন তাঁরা। যদিও রাকিবের মেজ ভাই আব্দুল হাকিম বলেন, ‘‘দাদা গ্রামে কোনও মিশন, মাদ্রাসা বা মসজিদ তৈরি করেননি।’’

কেন এ সবের খোঁজ জেলা পুলিশ পেল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি, তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘পেশাদারিত্ব পুরোপুরি হারিয়েছে পুলিশ। সে সুযোগেই জঙ্গিরা তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছে।’’ বিষয়টি জেলা গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা কি না তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি জেলা পুলিশ সুপার রাহুল দে। তবে তৃণমূল নেতাদের দাবি, দেশের বড় নিরাপত্তায় গাফিলতি এ রাজ্যের বাইরেই হয়েছে। যোগী-রাজ্য উত্তরপ্রদেশেও জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের খবর পাওয়া যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement