পরিদর্শনে সৌরভ। নিজস্ব চিত্র।
বাগানের ঘরগুলি দীর্ঘদিন সংস্কার না-হওয়ায় বর্ষায় শ্রমিকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গরমে পানীয় জলের সমস্যা প্রবল। মঙ্গলবার টি ়ডিরেক্টরেটের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী মোহরগাঁও বাগানে গেলে তাঁকে এমনই অভাব অভিযোগের কথা জানান শ্যাম মুণ্ডা, স্যামুয়েল ওঁরাও, প্রতীমা ওঁরাও, গুলপি ওঁরাওদের মতো শ্রমিকেরা। শীঘ্রই নতুন গঠিত টি ডিরেক্টরেটের অফিস চালু করে শ্রমিকদের ওই সমস্ত সমস্যা মেটাতে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দেন চেয়ারম্যান।
তবে এ দিন চা বাগানের পরিস্থিতির জন্য অতীতে কংগ্রেস এবং বর্তমানে বিজেপি’র নিয়ন্ত্রণে থাকা কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। সৌরভের কথায়, ‘‘অতীতে কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকার সময় বা বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার কেউই চা বাগানের জন্য কিছু করছে না। প্রধানমন্ত্রী আটটি বাগান অধিগ্রহণের জন্য বলেগিয়েছেন। অথচ সেই ব্যবস্থা আজও হল না।’’ তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী চা বাগানের শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে আন্তরিক। সে কারণে টি ডাইরেক্টরেট তৈরি করেছেন। শীঘ্রই শিলিগুড়িতে বিবেকানন্দ ভবনে অফিস চালু করা হবে। বিভিন্ন জেলাগুলিতে চা বাগানগুলিতে শ্রমিকদের পরিস্থিতি সমীক্ষা করে দেখা হবে। সে জন্যই চেয়ারম্যান হিসাবে তিনি বিভিন্ন বাগান ঘুরে দেখার কাজ শুরু করেছেন বলে তিনি জানান।
তবে আগে চা শ্রমিকদের উন্নয়নে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে সৌরভের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন আইএনটিইউসি’র উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা নেতা অলক চক্রবর্তীর। তাঁর দাবি, কংগ্রেস জমানায় টি বোর্ডের মাধ্যমে শ্রমিকদের বাড়ি সংস্কারের জন্য মালিকদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হত। চা বাগানগুলিকে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার অধীনে এনেছে কেন্দ্রের কংগ্রেস সরকারই। চা বাগানে সজল ধারা প্রকল্পে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা কংগ্রেসের সময় কেন্দ্রেরই প্রকল্প ছিল। অলকবাবু বলেন, ‘‘সেগুলি ভুললে চলবে না। সৌরভবাবু সে সময় কংগ্রেসের সঙ্গেই ছিলেন।’’ তবে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার চা বাগান অধিগ্রহণের কথা বলে কিছুই করেনি বলে তিনি অভিযোগ তোলেন। বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি প্রবীণ অগ্রবালের কথায়, বর্তমান রাজ্য সরকার পাঁচ বছর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামন একাধিকবার উত্তরবঙ্গে এসে চা বাগানের সমস্যা নিয়ে বৈঠক করেছেন। বন্ধ, অচল চা বাগান অধিগ্রহণের কথা জানিয়ে সেই কাজ শুরুও হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের থেকে বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়। প্রবীণবাবু বলেন, ‘‘কেন্দ্রের উদ্যোগ দেখে রাজ্য সরকার এত দিনে কিছু করতে চাইছে। আসলে তারা রাজনীতি করছেন।’’