লতা মঙ্গেশকর। ফাইল চিত্র।
‘তুম না জানে কিস জাহা মে খো গয়ে’, আজ তাঁরই গাওয়া সেই বিখ্যাত গানটা বারবার মনে পড়ছে।
কোথায় হারিয়ে গেলেন তিনি? যাঁকে দেখে আমার মতো অনেকেরই শৈশবে গানের প্রতি ভালোবাসা জন্মেছিল। তাঁকে সামনাসামনি আমি কখনও দেখিনি। কিন্তু শৈশবেই গোটা হৃদয় অধিকার করে নিয়েছিল তাঁর সুরেলা কণ্ঠে গাওয়া একের পর এক গান। আমিও গান গাই। কিন্তু আমরা এতটাই ক্ষুদ্র, তাঁকে নিয়ে নতুন কী লিখব? তবে কৌতূহল হোক বা ইচ্ছে, সেটা থেকেই গেল— লতা মঙ্গেশকরের গলায় কি অন্য কিছু ছিল?
গোটা দেশে অনেক শিল্পী রয়েছেন। যাঁরা অনেকেই খুব ভাল গান করেন। অনেকের গলা ‘ঈশ্বর প্রদত্ত’— এমনটাও বলে থাকি আমরা। কিন্তু লতা যেন সব ধরাছোঁয়ার বাইরে। শিল্পী নয়, একজন শ্রোতা হয়ে আমি বলতে পারি, ওঁর মতো মিষ্টি সুরেলা গলা যেন আর কারও পাইনি। তাঁর প্রত্যেকটা গানেই যেন রয়েছে জাদুর ছোঁয়া। এই প্রসঙ্গেই বলি, ‘মেরে ওয়াতন কি লোগো’ অনেকেই গেয়েছেন। কিন্তু লতার মতো দরদ, এমন আবেগ যেন কোথাও নেই। প্রতিটা ছত্রে যেন ঝরে পড়েছে দেশমাতার প্রতি অগাধ ভালবাসা। যে গান শুনে কেঁদে ফেলেছিলেন জওহরলাল নেহরুও। তাই ইচ্ছে ছিল, কৌতূহলও। লতা মঙ্গেশকরের গলা নিয়ে গবেষণা হোক। শিল্পী বন্ধুদের অনেকের কাছেই শুনেছি, যে ভাবে উনি গান তুলতেন, তা শেখার। নির্দেশক যা চাইতেন, গানের কোন ছত্রে হাসি, কোথায় কান্না, তা নির্দেশকের প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে যেত।
তিনি ছিলেন সাক্ষাৎ সরস্বতী। সেই সরস্বতী পুজোর ভাসানের দিনেই ভাসান হল ভারতের সরস্বতীর। তাই মনটা সকাল থেকেই ভীষণ খারাপ। যে অপূরণীয় ক্ষতি আমাদের হল, তা কোনও দিনই আর পূরণ হওয়ার নয়। একটা সময় সিনেমা মানেই লতার সঙ্গে কিশোরকুমার, হেমন্তের গান। কল্পনায় যেন দেখতে পাই, স্বর্গেই আলাদাভাবে রয়েছে সুরলোক। যেখানে রয়েছেন কিশোরকুমার, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়। এ বার সেখানে গিয়ে অন্য ভুবন মাতাবেন সুর সম্রাজ্ঞী।
অনুলিখন: বাপি মজুমদার